পশ্চিম সুন্দরবনের ৫৪ টি মিঠা পানির পুকুরের ৫৩টিতে লবণ পানি প্রবেশ

বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলির অন্যতম বনভূমি সুন্দরবন নিজের বুক পেতে দিয়ে বিভিন্ন সময় ভয়াবহ সাইক্লোন-ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস-জোয়ারের পানিতে বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বনের।

পশ্চিম সুন্দরবনের ৫৪টি মিঠা পানির পুকুরের মধ্যে ৫৩টিতে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে লবণ পানি প্রবেশ করেছে। এতে বন্যপ্রাণী ও বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাপক সুপেয় পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার, মায়াবী হরিণসহ বন্যপ্রাণীরা সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতো এসব পুকুর থেকে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীর একমাত্র সুপেয় পানির উৎস ছিল মিঠা পানির পুকুর। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে পশ্চিম সুন্দরবনের ৫৪টি সুপেয় পানির পুকুরের মধ্যে ৫৩টি ডুবে গেছে। সাতক্ষীরার মাত্র একটি পুকুরে পানি ঢুকেনি। পুকুরে নোনা পানি ঢুকে যাওয়ায় বন্যপ্রাণীরা সুপেয় পানির অভাবে পড়ে যাবে। প্রবল বাতাসে প্রায় ১১টি জেটি ভেঙে গেছে। কয়রা ও বজবোজায় দুটি কাঠের অফিস ভেঙে গেছে। জেটি থেকে উঠে অফিসে যাওয়ার প্রায় ৩০ মাটির রাস্তা জলোচ্ছ্বাসের পানিতে ধুয়ে গেছে। রাস্তাগুলো আবার করতে হবে। কোনো বন্যপ্রাণী মারা যাওয়ার খবর এখনও পাওয়া যায়নি। গাছ-গাছালির ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কোথাও ৭ ফুট কোথাও ৮ ফুট বেশি জোয়ারের পানি উঠেছে।

জানা যায়, সুন্দরবনকে দুইটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ ও সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সদর দপ্তর খুলনায় এবং সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের সদর দপ্তর বাগেরহাটে অবস্থিত।

বুধবার (২৬ মে) ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পশ্চিম সুন্দরবনের নদীগুলোতে স্বাভাবিকের তুলনায় ৭ থেকে ৮ ফুট পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সুন্দরবন সংলগ্ন শিবসা, কপোতাক্ষ, চুনা, খোলপেটুয়া, মোংলাঞ্চসহ প্রায় সব নদীতেই পানি বৃদ্ধি পায়।

Scroll to Top