‘বিএনপিকে নির্বাচনের বাহিরে রাখার ক্ষমতা কারও নেই’

বিএনপি নির্বাচনে যাবেই মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘দেশের চলমান সংকট থেকে বেরিয়ে আসার দুটো পথ আছে। একটি নির্বাচন অন্যটি হচ্ছে গণঅভ্যুত্থান। আমরা নির্বাচন করতে চাই। কিন্তু আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। তবু্ও নির্বাচনে আমরা যাবই, বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে মানুষের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনে যাবো। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলছি- কারও কোন ক্ষমতা নেই বিএনপিকে নির্বাচনের বাহিরে রাখার। কারণ সামনের যে নির্বাচন এটা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচন হবে না। এই নির্বাচন হবে গণনির্বাচন।’

শনিবার (২১ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ৩য়তলার স্বাধীনতা হলে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সংকট: বন্ধু রাষ্ট্রের ভূমিকা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘বাংলাদেশের সব কিছুর সমাধান হচ্ছে একটি পরিবর্তন। গণতন্ত্রের ,অর্থনৈতিক লুটপাটের, নির্মম হত্যা, অপহরণের যে সংকট, এই দেশটাকে রসাতলে নিয়ে যাওয়ার যে সংকট এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের একটি পরিবর্তন দরকার। সে পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিবে বিএনপি। সেই দলের নেত্রী চিকিৎসা শেষে ৩ মাস পরে লন্ডন থেকে দেশে আসলেন। দলীয় নেতাকর্মীরা যাতে তাঁকে অভ্যর্থনা দিতে না পারে তার জন্য বাস বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার, লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তাই সরকারকে বলবো লাইট বন্ধ করে লাভ কি? বেগম জিয়া তো অন্ধকারেও আলো, তিনি (খালেদা জিয়া) অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকলেও বাংলাদেশের মানুষ তাঁকে দেখতে পায়।’

এসময় বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের একটিও সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হয় না। পল্টনে দেয়া হয় না, সোহরাওয়ার্দীতে দেয়া হয় না এমনকি ঢাকার বাহিরে কোন বিভাগীয় শহরেও করতে দেয়া হয় না। যার কারণে গত ১৯ তারিখে জনগণ খুব সামান্য একটা সুযোগ পেয়ে এয়ারপোর্ট এলাকায় প্রিয় নেত্রীকে দেখতে মানুষে মানুষে সয়লাব হয়ে গিয়েছিল। সেই অসুস্থ নেত্রীকে ২ দিন পরপর কোর্টে নিয়ে সরকার হয়রানি করছে। কিন্তু সরকার বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছে এ বছর না হলেও আগামী বছর তিনি হচ্ছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্র প্রধান। এটা খুব স্বাভাবিক হিসেব। আওয়ামী লীগের জিততে হলে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী থাকতে হবে। এছাড়া আওয়ামী লীগের কোন ভবিষ্যৎ নাই। শেখ হাসিনা ছাড়া যে কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকলে বিএনপি জয়লাভ করবে।’

তিনি বলেন, ‘কথা বললে অনেক কথাই বলা যায়। বেগম খালেদা জিয়ার উপর যে অত্যাচার হচ্ছে এটা জাতির উপর অত্যাচার। কারণ তিনি ৩ বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, প্রতিবারই তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আন্দোলন সংগ্রাম করে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাকে ঠেকানো আর জনস্রোত, গণজোয়ার ঠেকানো একই কথা।’

বাংলাদেশের সকল সংকটের মূল জায়গা বর্তমান অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন মন্তব্য করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘তিনি (হাসিনা) পদত্যাগ করা মাত্রই দেশে রোহিঙ্গা সংকট ও লুটপাটের সমাধান হবে, আইশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে এবং জনগণের দাবি তাঁর পদত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সকল সমস্যার সমাধান হোক।

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বন্ধুহীন একটি দেশ। বাংলাদেশের কোন বন্ধু নাই। পাশের বাড়ির যে বন্ধুটা ছিল যাকে আমরা পরীক্ষিত বন্ধু বলি তিনিও এখন অন্যের হাত ধরে ফেলেছেন। কতই না তাদের খাওয়াইলাম, প্রেম ভালবাসা করলাম, কিন্তু বন্ধু আমাদের রোহিঙ্গা সংকটের সময় খুব দ্রুত মিয়ানমারের প্রধান রাষ্ট্রীয় পরামর্শ দাতা অং সান সু চির হাত ধরে ফেললেন। মোদী একটি সাম্প্রদায়িক দেশের নেতা। যারা তাজমহলও ভাঙতে চায়, তাঁর দেশে নির্বিচারে মুসলমানদের হত্যা করা হয়।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, জিনাপের সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার, কৃষক দলের নেতা আব্দুর রাজি, আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি নাজমুল হোসেন রনি প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়ঃ ১৫১০ ঘণ্টা, ২১ অক্টোবর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস

Scroll to Top