ওয়েব সিরিজ। নামটা খুব অপরিচিত ঠেকছে, তাই না? কেউ কেউ হয়তো ভাবছেন, ‘এটা আবার কী জিনিস?’ সহজ ভাষায়, শুধু অনলাইন বা অনলাইন টিভির জন্য তৈরি ও প্রকাশিত ধারাবাহিকের (ধারাবাহিক ভিডিও) নাম ওয়েব সিরিজ। সাধারণত ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, ট্যাব ও স্মার্টফোনই এ ধরনের সিরিজ দেখার মাধ্যম। মূলত নব্বই দশকে আমেরিকায় এর জন্ম। বিশ শতকের শেষ দিকে উত্থান। একুশ শতকে এর বিশ্বভ্রমণ, বিনোদনের প্রভাবশালী বিকল্প মাধ্যম হয়ে ওঠা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এর জয়যাত্রা শুরু অনেক আগে। তবে বাংলাদেশে ওয়েব সিরিজের মাত্র ঊষাকাল যাচ্ছে। আর ঊষাতেই বিতর্ক, সমালোচনা ও চায়ের টেবিলে ঝড়!
ঈদ উপলক্ষে বরাবরই অসংখ্য নাটক-টেলিফিল্ম-অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়। এতকাল সেটি ছিল টিভিকেন্দ্রিক। গত রোজার ঈদে ওই ধারায় প্রথমবারের মতো যুক্ত হল অনলাইন। টিভির পাশাপাশি ওই সময় ইউটিউব চ্যানেলে একাধিক ধারাবাহিক নাটক প্রকাশ পায়। তার মধ্যে সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে ৭ পর্বের ‘আমি ক্রিকেটার হতে চাই’ ও ‘অ্যাডমিশন টেস্ট’; ‘এল আমোর টিভি’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে ‘টেস্টিং সল্ট’, বাংলা ঢোলের উদ্যোগে ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম বাংলাফ্লিক্সে প্রচার পায় বিশেষ নাটক ‘উপহার’। বাংলাদেশে ওয়েব সিরিজের আনুষ্ঠানিক প্রকাশটা মূলত তখন। এরপর ঈদুল ফিতরের ধারাবাহিকতায় ঈদুল আজহায়ও প্রকাশ পেল একাধিক নাটক। তন্মধ্যে সিএমভির ব্যানারে ৭ পর্বের ওয়েব সিরিজ ‘দ্য লিস্ট’, ধ্রুব এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে সাত পর্বের দুই সিরিজ ‘বাঘবন্দি’ ও ‘আবাসিক হোটেল’, কিংবা টয়া অভিনীত ‘পালাবি কোথায়’ উল্লেখযোগ্য।
আলোচনা বা প্রশংসা নয়, সমালোচনা ও বিতর্ক দিয়েই বাংলাদেশে ‘ওয়েব সিরিজ’-এর জনযাত্রা। ইতিবাচকতা নয়, নেতিবাচকতা দিয়েই ওয়েব সিরিজের দৃষ্টি আকর্ষণ। এমনকি কপালে জনপ্রিয়তার তকমা সাঁটার আগেই সেঁটে গেছে যৌনতা, অশ্লীলতার তকমা। গত ঈদুল আজহায় প্রচারিত ‘দ্য লিস্ট’, ‘বাঘবন্দি’ ‘পালাবি কোথায়’ প্রভৃতি ওয়েব সিরিজে অপ্রাসঙ্গিক ও অহেতুক যৌনতার সুড়সুড়ি, অশালীন সংলাপ ও অঙ্গভঙ্গি, মাদক গ্রহণের দৃশ্যবালীর কারণেই মূলত এই সমালোচনা। বিষয়বস্তু বা শিল্পগুণের বদলে ‘অকাক্সিক্ষত’ দৃশ্যের বন্দুকে সস্তা ও দ্রুত জনপ্রিয়তা বা বিপুল ভিউয়ার শিকারের চেষ্টা, নাটকগুলোতে খুব দৃষ্টিকটুভাবে পরিলক্ষিত হয়। দৈনিক যুগান্তর অবলম্বনে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, ২৬ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি