আর দেখা যাবে না রুগ্ন যুবরাজকে

যুবরাজ নাম দিয়ে ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা চিড়িয়াখানায় আনা হয় ৫ বছর বয়সী সিংহটিকে। দীর্ঘদিন অবহেলা অনাদরে রুগ্ন শরীর নিয়ে কোনোমতে দর্শনার্থীদের সামনে দাঁড়াতে পারলেও এখন শুয়ে থেকেই মৃত্যুর প্রহর গুনছে সে। চিকিৎসা দিয়েও ওকে আর দর্শনার্থীদের জন্য উপযোগী করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের।

গত এক সপ্তাহে রুগ্ন যুবরাজের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর এর চিকিৎসার জন্য দৌড়ঝাপ শুরু হয় সংশ্লিষ্ট মহলে। এরই মধ্যে রুগ্ন যুবরাজের প্রদর্শন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজকালের মধ্যেই একটি নিবিড় পর্যবেক্ষণ কক্ষে যুবরাজকে রাখা হবে বলে জানা গেছে।

বুধবার বিকালে রুগ্ন যুবরাজকে দেখতে কুমিল্লা চিড়িয়াখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ঢাকা থেকে আসা পশু চিকিৎসকরা। এসময় তারা গান দিয়ে ইনজেকশন পুশ করে যুবরাজকে চিকিৎসা প্রদান করেন। এছাড়া অন্যান্য পশু-পাখির খোঁজ খবর নেন।

ঢাকা চিড়িয়াখানার ভেটেনারি সার্জন ডা. নাজমুল হাসান জানান, বৃদ্ধ সিংহটি দীর্ঘদিন যাবত বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছে। এর বয়স এখন প্রায় ১৭। এ বয়স সিংহের বার্ধ্যক্যের সময়। তাই সে যতদিন বেঁচে থাকে ততদিন এর চিকিৎসা ও খাবার দেয়া হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, কুমিল্লা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুল মান্নান, কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতালের ভেটেনারি অফিসার ডা. মাকসুদুল হাসান।

এদিকে বুধবার রাত ১১টা ৩৪ মিনিটে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী সঞ্জয় কুমার ভৌমিক এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘সবার জীবনেই একদিন বার্ধক্য আসবে। এটা মেনে নেওয়াটাই স্বাভাবিক। যুবরাজ সিংহটি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছে, স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল হয়ে গেছে। ঠিকমত খেতে পারছে না। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বলছে তার আয়ুষ্কাল শেষ। প্রদর্শন না করে নিবিড় পর্যবেক্ষণ সেলে রাখতে হবে। কিন্তু অসহায় রুগ্ন যুবরাজকে নিয়ে না জেনে বিরূপ মন্তব্য করা কতটা রুচিসম্মত।

যুবরাজের বার্ধক্যকালের রুগ্ন ছবিটা পোস্ট করা সিংহটাকে হেয় করার শামিল।’

উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে নগরীর কালিয়াজুড়ি এলাকায় জেলা প্রশাসকের বাংলোর পাশে ১০ দশমিক ১৫ একর জমিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, ০২ নভেম্বর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসএফ