স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক নেই তাই ‘হারবালের’ রমরমা ব্যবসা

অমিত বণিকঃ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে স্বাস্থ্যসেবা না মেলার যে খবর সম্প্রতি পত্রিকার পাতায় প্রকাশ হয়েছে, তা দুর্ভাগ্যজনক হলেও আমাদের জন্য কষ্টদায়ক। বস্তুত ঢাকার বাইরের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসকের অনুপস্থিতি নিয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে নানা সময়ে অসন্তোষ, হুঁশিয়ারি ও পদক্ষেপ সত্ত্বেও পরিস্থিতি ভিন্ন। কটিয়াদীর সরকারি হাসপাতালটি তার খণ্ডচিত্র মাত্র।

সদ্য প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫০ শয্যার হাসপাতালে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ চিকিৎসকের ২২টি পদ থাকলেও সেখানে ‘কর্মরত’ রয়েছেন ৭ জন। তবে কর্মস্থলে ‘উপস্থিত’ থাকেন আরও কম। চিকিৎসকদের বরাদ্দ পদ ও পদায়নের এই ফারাক নতুন নয়, আমরা সবাই জানি। তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের পক্ষে প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসক নিয়োগ সহজও নয়।

কিন্তু কটিয়াদীর চিত্রটা আরও উদ্বেগজনক এই কারণে যে, চিকিৎসকের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে সেখানে ‘হারবাল’ চিকিৎসা ব্যবসাও রমরমা চলছে। ফলে উপজেলার চার লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। মনে রাখা জরুরী, প্রত্যন্ত ওই অঞ্চলের মানুষের জন্য সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিকল্প কেবল হাতুড়ে চিকিৎসা ও ঝাড়ফুঁক।

তাতে যে স্বাস্থ্য ও প্রাণহানি ঘটে, তার দায় এই ‘হাসপাতাল’ সংশ্লিষ্ট বিভাগ এড়াতে পারে কি? জরুরি বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় কোন নাগরিক যদি চিকিৎসা না পেয়ে বা ভুল চিকিৎসায় প্রাণ হারান, সেই দায় কি কর্তৃপক্ষের কাঁধেই বর্তায় না? আমরা অবিলম্বে দেখতে চাই, কর্তৃপক্ষ হাসপাতালটির সুষ্ঠু চিকিৎসা কার্যক্রম নিশ্চিত করেছে।

এক্ষেত্রে অবিলম্বে ২২টি না হোক, অন্তত অর্ধেক সংখ্যক চিকিৎসকের পদায়নের বিকল্প নেই। তারও চেয়ে জরুরি, পদায়নকৃত সকল চিকিৎসকদের কর্মস্থলে যথাযথ উপস্থিতি। অস্বীকার করা যাবে না, সরকার উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতালগুলোতে অবকাঠামোগত উম্নয়নে মনোযোগী হয়েছে।

কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসকই যদি না থাকে; আধুনিক ভবন, ৫০ শয্যা- সবই চিকিৎসাপ্রার্থী জনসাধারণের জন্য উপহাস ছাড়া কিছু নয়। এ সংকট দূরীকরনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।

 

“এ বিভাগে প্রকাশিত কলাম লেখকের নিজস্ব মতামত। আমাদের সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত নাও মিলতে পারে” 

বাংলাদেশ সময় : ১৫৩০ ঘণ্টা, ০৪ অক্টোবর,  ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/ডিএ