ইফতারের আগেই আমার সাথে ইচ্ছের বিরুদ্ধে সে……….

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা উচিত। জাতীয় দলের একের পর এক ক্রিকেটারের সঙ্গে নারীঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর আসছে। এবার এমনই অভিযোগ নিয়ে বিসিবির দুয়ারে হাজির হলেন পেসার মোহাম্মদ শহীদের স্ত্রী ফারজানা আক্তার।

ঈদের আগেই খবরটা চাউর হয়েছিল। গণমাধ্যমেও উঠে এসেছিল কিছু তথ্য। স্বামীর মর্মস্পশী নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেসার মোহাম্মদ শহীদের স্ত্রী ফারজানা আক্তার।

এতে স্ত্রী ও সন্তানের মর্যাদার দাবি জানিয়ে ফারজানা লিখেছেন, ‘একাধিক তরুণীতে আসক্ত হওয়ার পর অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে, যখন শারীরিক চাহিদা মেটানোর প্রয়োজন হতো তখনই সে (মোহাম্মদ শহীদ) আমার কাছে আসতো। আমার পছন্দ-অপছন্দ, ভালো-মন্দ লাগাকে সে কোনো গুরুত্ব দিতো না। এমনকি আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকলেও সে আমার ওপর জোর খাটাতো। আমি তার কাছে শুধু যৌন চাহিদার বস্তু হিসেবে রয়ে গেলাম। ’

তিনি বলেন, ‘এমনও হয়েছে, গত বছরের পবিত্র রমজান মাসে একদিন ইফতারের ঠিক ১০ মিনিট আগে আমার রোজা নষ্ট করে ইচ্ছের বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করে। ’

ফারজানা আক্তারের বর্ণনায় উঠে এসেছে তাদের গর্ভের সন্তান নষ্টে শহীদের চাপ দেওয়ার প্রসঙ্গও, ‘দ্বিতীয় সন্তান গর্ভে এলে তা নষ্ট করার জন্য চাপ দিতেন শহীদ এবং সেই কথা না মানায় আরো বেশি নির্যাতন চলতে থাকে আমার ওপর। ’

অভিযোগনামায় ফারজানা আক্তার বলেন, ‘২০১১ সালের ২৪ জুন ক্রিকেটার মোহাম্মদ শহীদের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সে সময় শহীদের পারিবারিক অবস্থা ভালো ছিল না। কিন্তু আমাদের সুখের সংসার ছিল। বিয়ের প্রথম তিনটি বছর আমাদের ভালো যায়। শহীদ তখন নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় ক্লাবে খেলাধুলা করত। ২০১৫ সালে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজে অভিষেক হয় আমার স্বামী মোহাম্মদ শহীদের। ধীরে ধীরে সে তারকাখ্যাতি পেতে শুরু করে। ’

স্ত্রীর দাবি, এরপর থেকেই শহীদ বললে যান। বদলাতে থাকে তার আচরণও। দিনকে দিন স্ত্রীর প্রতি শহীদের আগ্রহ কমতে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অসংখ্য তরুণীর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে শহীদ। একাধিক তরুণীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে শুরু করে। বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় সে।

এসব নিয়ে বলার পরই তার ওপর নির্যাতন বেড়ে যায় শহীদের। বাধ্য হয়ে চলতি বছরের ২৩ জুন ফারজানা বাবার বাড়ি যেতে বাধ্য হন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।

বিসিবি সভাপতির কাছে ন্যায়বিচার চেয়ে তিনি বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘আমি আমার দুই সন্তান নিয়ে স্বামীর সংসারে ফিরে যেতে চাই এবং স্ত্রীর পূর্ণ অধিকার নিয়ে স্বামীর সংসার করতে চাই। বাবা ছাড়া আমার দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। অন্তত আমার দুই সন্তানের বিষয়টি বিবেচনা করে আপনি দয়া করুণ, ন্যায়বিচার করুন। ’

বিসিবি কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দিয়ে সাংবাদিকদের সামনে শহীদকে ফোন দেন তার স্ত্রী ফারজানা। এ সময় শহীদ ফরজানাকে বলেন, ‘সংসার করার ইচ্ছে থাকলে মিরপুরে যেও না। ’

পরে ফারজানা আক্তারের অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ শহীদ বলেন, ‘এসব মিথ্যা। আমাকে হয়রানি করতে এসব করা হচ্ছে। ’

সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে নারীঘটিত অভিযোগের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। জেল খেটেছেন তিনজন। রুবেল হোসেন, আরাফাত সানির পর শহীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠল। শাহাদাত হোসেন রাজীবের বিরুদ্ধে উঠেছিল শিশু নির্যাতনের খবর। সবগুলোই আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। যা নিশ্চিতভাবেই দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তির জন্য ভালো খবর নয়।

বাংলাদেশ সময় : ১১৪৯ ঘণ্টা, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এ