রাজধানীতে মৃত চিকিৎসকের স্বাক্ষরে রোগীদের দেওয়া হতো ভুয়া রিপোর্ট

রাজধানীতে মাসের পর মাস মৃত চিকিৎসকের নামে স্বাক্ষর দিয়ে রোগীদের দেওয়া হতো ভুয়া রিপোর্ট। ১০ বছর ধরে থাইরয়েড, হেপাটাইটিসের মতো পরীক্ষার ল্যাব পরিচালনা করলেও সক্ষমতা নেই বললেই চলে। রাজধানীর শ্যামলীতে হাইপোথাইরয়েড সেন্টার নামে একটি ল্যাবে অভিযানে বেরিয়ে এসেছে অনিয়মের এ ভয়াবহ চিত্র।

গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় শ্যামলী স্কয়ারের বিপরীতে ২/১ নম্বর বাড়ির হাইপোথাইরয়েড সেন্টারে অভিযান চালান র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। অভিযানে সোহেল রানা ও রানা নামে ওই প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মচারীকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দিয়েছে র‌্যাব। মালিক আবদুল বাকের পলাতক।

প্রতারণায় রিজেন্ট কিংবা জেকেজিকেও হার মানিয়েছে ল্যাবটি। এখানে থাইরয়েডের নানা রিপোর্টসহ হেপাটাইটিস, ব্লাড কালচারসহ চলত নানা পরীক্ষা। রিপোর্ট দিতে ব্যবহার করত নামি চিকিৎসকের নাম। সর্বশেষ অধ্যাপক মনিরুজ্জামানের স্বাক্ষরে গত অক্টোবরে রিপোর্ট দেওয়া হলেও এই চিকিৎসক করোনায় প্রাণ হারান মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। এ ছাড়া আরও মিলেছে চিকিৎসকের স্বাক্ষর করা অসংখ্য ভুয়া রিপোর্ট।

কর্মচারীরা বলছেন, দু-একটা টেস্ট করা হলেও বাকিগুলো দেওয়া হতো অনুমান করে। কিছু কিছু টেস্ট করা হতো, সবগুলোর করা হতো না।

হাইপোথাইরয়েড সেন্টার দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কুরিয়ারে স্যাম্পল সংগ্রহ করে মেইলে রিপোর্ট দিত। র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম জানান, গত ৫ বছরে কোনো প্রফেসর যথাসম্ভব এখানে বসেইনি। তার মানে সবগুলো রিপোর্টই ফেক।

তারা চিকিৎসকদের নামে অগ্রিম স্বাক্ষর নিয়ে রাখত। আজব ব্যাপার হলো অন্য হাসপাতালে অভিযান চালানোর সময় দেখেছি চিকিৎসকের পরিবর্তে টেকনিশিয়ানরা স্বাক্ষর করত। কিন্তু এখানে গাড়ির ড্রাইভাররাও স্বাক্ষর করে দিচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠান হার মানিয়েছে রিজেন্ট কিংবা জেকেজিকেও। ১০ বছর ধরে ল্যাব পরিচালনা করছে হাইপোথাইরয়েড সেন্টার। থাইরয়েডের নানা রিপোর্টসহ হেপাটাইটিস, ব্লাড কালচারসহ চলত নানা পরীক্ষা। অথচ সেই ল্যাবের বেহাল দশা।