তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ ও ধর্ষণ, যুবক গ্রেফতার

বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পরিচয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক তরুণীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মো. আবির হাসান (২৮) নামে এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আবির হাসান পাবনার চাঁদ মোহন থানার বরদা নগর দক্ষিণ পাড়া গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে।

আজ বৃহস্পতিবার ভোলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফরহাদ সর্দার।

এসময় লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, গত ১০ ফেব্রুয়ারি ভোলা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা তাহার মেয়ের (১৮) নিখোঁজ হওয়া সংক্রান্ত থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে নিখোঁজ ভিকটিম আসামির মোবাইল ব্যবহার করে কৌশলে ভিডিও কলে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে জানায় আবির তাকে অপহরণ করে দিনাজপুরের কোতয়ালী থানা এলাকায় একটি রুমে আটকে রেখেছে।

এই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনাজপুর কোতয়ালী থানা পুলিশের সহযোগিতায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে দিনাজপুরের কোতয়ালী থানাধীন পাহাড়পুর ইকবাল স্কুল সংলগ্ন এলাকা থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। এসময় পুলিশ অভিযুক্ত আবির হোসেনকে গ্রেফতার করে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আসামি আবির একজন অত্যন্ত প্রতিভাবান পেশাদার অপরাধী ও প্রতারক। আসামি আবির ভিকটিমের সাথে ইতিপূর্বে মোবাইল ফোনে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে তার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও নিয়ে তাকে ব্লাকমেইল করে আসছিল। আসামি আবির নিজেকে বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়ার নামে ভিকটিম ও তার পরিবারের কাছ থেকে ১ লাখ পাঁচ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি আসামি আবির সরকারি সফরে ভোলায় এসেছেন মর্মে ভিকটিমকে জানান এবং ভোলার সার্কিট হাউজে তার সাথে দেখা করার জন্য বলেন। ভিকটিম তার পরিবারের সদস্যদের চাকরির আশায় আবিরের সাথে দেখা করার জন্য সার্কিট হাউজে যাচ্ছিলেন। পথে ভোলা সার্কিট হাউজ মোড়ের আগে আবির তার একাধিক সহযোগী নিয়ে ভিকটিমকে একটি মাইক্রোবাসে টেনে তুলে চেতনানাশক দ্রব্য দ্বারা অজ্ঞান করেন। এরপর দিনাজপুর কোতয়ালী থানা এলাকায় নিয়ে যায় এবং সেখানে একটি রুমে তাকে আটক রাখে এবং একাধিকবার ধর্ষণ করে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে এরকম একাধিক ঘটনার সাথে তার জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। পাশাপাশি আসামি একজন মানবপাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় ভোলা সদর মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে।