টাঙ্গাইলের হৃদয়কে ব্লু হোয়েল গেম নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ

টাঙ্গাইলে গোপালপুর উপজেলায় ২০ বছর বয়সী হৃদয় নামের তরুণ “ব্লু হোয়েল গেম” খেলার বিষয়টি গত ১২ অক্টোবর যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠে। গতকাল (১৩ অক্টোবর) তাকে দেখার জন্য তার বাড়িতে উপজেলা সহ দূর দূরান্তের লোকজন এসে ভিড় জমায়। এদিকে খবর পেয়ে গোপালপুর থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাত ৮টায় হৃদয়কে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। হৃদয়কে পুলিশ আটক করায় তার পরিবার জুড়ে একটা পুলিশি আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে।

সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৩ অক্টোরব) সারাদিন ধরে উপজেলা এবং জেলা সংবাদ কর্মীরা হৃদয়ের বাড়িতে ভিড় করতে থাকে। সন্ধ্যার দিকে এলাকায় এক গাড়ী পুলিশ ঢুকলে হৃদয়ের স্বজনদের মধ্যে একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ জানিয়েছেন, পুলিশের ভয়ে হৃদয়ের মা হাজেরা বেগম ছেলেকে নিয়ে আত্মগোপন করেছেন, তাদেরকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে হৃদয় এবং তার মাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তাদের ঘরে তালা ঝুলতে দেখা যায়। হৃদয়ের কাকা মোঃ আব্দুল রাজ্জাক জানান গতকাল (১২ অক্টেবর) দুপুরের দিকে হৃদয় এবং তার মা হাজেরা বেগম হেমনগর তার ফুফুর বাড়ী বেড়াতে গিয়েছে।

হৃদয়ের চাচী রাণী বেগম জানান, সারাদিন ধরে তাদের বাড়িতে বিভিন্ন সংবাদ কর্মীরা এসে ভিড় জমিয়েছে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাড়িতে পুলিশ আসে। পুলিশ দেখে তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে এবং বাড়ির ছেলেরা সবাই ভয়ে দূরে পালিয়ে যায়। হৃদয়কে না পেয়ে পুলিশ চলে গেলে একই গ্রামের শামীম, হায়দর, ঠান্ডু তাদেরকে নানা রকম পুলিশ সংক্রান্ত ভয়-ভীতি মূলক কথা শুনায়। এবং হৃদয়কে দূরে কোথাও পালিয়ে যেতে বলে। এতে করে হৃদয়ের স্বজনদের মধ্যে একটা পুলিশি ত্রাস ছড়িয়ে পরে এবং হৃদয়কে দূরে কোথাও পালিয়ে থাকতে বলা হয়।

এদিকে রাত ৮টার দিকে হেমনগর ফুফুর বাড়ি থেকে হৃদয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে গোপালপুর থানা পুলিশ। এরপর তাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

গোপালপুর থানার ওসি হাসান আল মামুন জানান, বিতর্কিত ব্লু হোয়েল গেম খেলার বিষয়টি হৃদয় আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে হৃদয়ের পরিবারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) হৃদয়ের পরিবার সূত্রে জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ১১টার দিকে পুলিশ হৃদয়কে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে। তাদের ভেতর পুলিশ সংক্রান্ত যে আতঙ্ক বিরাজ করছিল সেটা এখন কেটে গেছে। আজ হৃদয়কে নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার কার্যলয়ে দেখা করতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, হৃদয় উপজেলার বয়ড়াপাড়া আলম নগর গ্রামের সৌদি প্রবাসী আমজাদ আলীর ছেলে। সে এসএসসি পাশ করার পর থেকেই গাজীপুর একটা পেপার মিলে চাকরি করে। ফেসবুক ব্যবহার করতে করতে গত ২২ দিন আগে সেচ্ছায় বিতর্কিত অনলাইন সুইসাইড গেম “ব্লু হোয়েল”-এ আসক্ত হয়ে পড়ে। তার অস্বাভাবিক আচরণ এবং কার্যকলাপে ১১ অক্টোবর তার পরিবার বিষয়টি বুঝতে পারলে তাকে গাজীপুর থেকে সেদিন রাতেই নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। এবং তাকে পারিবারিক নজরদারিতে রাখা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, ১৪ অক্টোবর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/নীল

Scroll to Top