নাঙ্গলকোটে শেকলে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় গৃহবধূকে নির্যাতন

যৌতুকের দাবিতে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে মুক্তা আক্তার (২৪) নামক এক গৃহবধূকে গাছের সাথে শেকল দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে। পৌরসভার বাতুপাড়া গ্রামে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে। ওই গৃহবধূর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।

স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকার বাতুপাড়া গ্রামের জালাল আহম্মদের ছেলে শেখ ফরিদ পাশ্ববর্তী মৌকারা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের মৃত আবুল খায়ের মেয়েকে ৬ বছর পূর্বে বিবাহ করেন। বিবাহের সময় মুক্তার মা ঋণ করে শেখ ফরিদকে এক লাখ টাকা যৌতুক প্রদান করেন। এরপরও মুক্তার স্বামী বার বার যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছে। কিন্তু স্বামীহারা নুরুন নাহার মেয়ে জামাই ও তার পরিবারের চাহিদা মেটাতে না পারায় দীর্ঘদিন যাবৎ মুক্তাকে নির্যাতন করে আসছে।

গত কিছুদিন পূর্বে সিজারিয়ান অপারেশনে মুক্তা সন্তান প্রসব করেন। গত শুক্রবার তার অপারেশনের সেলাইয়ের স্থানে ব্যাথা অনুভব করলে স্বামী শেখ ফরিদকে ওষুধ এনে দিতে বলে। কিন্তু স্বামী ওই দিন ওষুধ নিয়ে না এসে উল্টো তাকে স্বামীর জামা কাপড় ধুয়ে দিতে বললে মুক্তা অপারগতা প্রকাশ করে। এ নিয়ে গতকাল শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) স্বামী শেখ ফরিদ বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে তাকে নির্যাতন শুরু করলে মুক্তা আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

পরে মুক্তাকে তার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি বাড়ির উঠোনে বৃষ্টির মাঝে গাছের সাথে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগে জানা যায়। পরে নির্যাতিতা গৃহবধূর মায়ের মোবাইল ফোনে মুক্তা মারা গেছে বলে জানান শ্বশুর জালাল আহম্মদ। মুক্তার মা ও তার পরিবারের লোকজন এসে তাকে বাড়ির উঠোনে গাছের সাথে শিকলে বাধা বৃষ্টিতে ভিজতে দেখতে পায়। পরে মুক্তাকে উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে এ বিষয়ে চেষ্টা করেও অভিযুক্তদের বক্তব্য নেয়া যায়নি।
নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।