কোয়ারেন্টিনে থাকছেন না ভারতফেরত বাংলাদেশী ট্রাকচালকরা

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর রয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে। সরকারি নির্দেশ থাকার পরও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। ভারত ঘুরে যেসব বাংলাদেশী ট্রাক চালক ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করছেন, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ থাকলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না তা। এতে বন্দরে কর্মরত কাস্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষ, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকসহ স্থানীয়রা স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার আমীর মামুন জানান, ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী আসা-যাওয়া বন্ধ রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে যেসব ট্রাক ড্রাইভার বা হেলপার ভারতে গিয়ে পুনরায় ভোমরা বন্দরে ফিরে আসছেন, তাদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত থাকলেও অদ্যাবধি তা মানা হচ্ছে না। ফলে এসব ড্রাইভার বা হেলপার স্বাস্থ্যবিধি না মেনে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করায় বন্দরের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তারা সবাই স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

ভোমরা স্থলবন্দরের দায়িত্বে থাকা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মনিরুল ইসলাম জানান, গত রমজান মাস থেকে ভারত থেকে আগত প্রতিটি ট্রাকের কেবল একজন ড্রাইভার ব্যতীত হেলপার বা অন্য কোনো লোক বন্দরে প্রবেশ করতে পারবেন না। একই সঙ্গে পণ্যবাহী ট্রাক ব্লিচিং পাউডার মেশানো চটের ওপর দিয়ে চালিয়ে টায়ার জীবাণুমুক্ত করে ওয়্যারহাউজে প্রবেশ করানো হচ্ছে এবং ড্রাইভারকে স্ক্যানিং করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। মনিরুল ইসলাম আরো জানান, ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলো দিনের মধ্যে খালাস করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। ড্রাইভাররা যাতে রাতযাপন না করেন, সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। এজন্য জেলা প্রশাসক ও বন্দর কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। এ টাস্কফোর্স সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে বন্দরে।

এ ব্যাপারে ভোমরা বন্দরে করোনাকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মকর্তা ডাক্তার মো. মাহবুবুর রহমান জানান, ভোমরা রাশিদা বেগম হাইস্কুলকে কোয়ারেন্টিন সেল করা হয়েছে। কিন্তু এখানে আজ পর্যন্ত একজনও অবস্থান করেনি।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, মহামারী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, কাস্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ে একটি মিটিং করা হয়। মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বাংলাদেশ থেকে যেসব ট্রাক ড্রাইভার বা হেলপার ভারতে গিয়ে পুনরায় যেদিন ভোমরা বন্দরে ফিরবে, সেদিন থেকে ১৪ দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকবে। কিন্তু কেন এ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি, সেটি খোঁজ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

ভোমরা বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বন্দরে এ পর্যন্ত একজনও ড্রাইভার-হেলপার কোয়ারেন্টিনে না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, এরই মধ্যে ভারতে যাওয়া ড্রাইভারদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে কোয়ারেন্টিনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।