চাল বাজারঃ চালের বাড়তি দাম যেন উৎপাদকের কাছে পৌঁছায়

দেশের কৃষিখাতের যতটা উন্নতি হয়েছে, ততটা উন্নতি হয়নি কৃষকের। অন্যদিকে উৎপাদনের প্রাক্কলনেও রয়েছে সমস্যা। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে রক্ষা করাই এই খাতে মূল চ্যালেঞ্জ। আগামী বোরো ধান চাষের পরবর্তীসময়ে খাদ্য পরিস্থিতি নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। বর্তমানে চালের বাড়তি দাম যেন উৎপাদকের কাছে পৌঁছাতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘চালের দাম বাড়ছে কেন? কার লাভ, কার ক্ষতি’ শীর্ষক একটি ভার্চ্যুয়াল সংলাপে একথা বলেন বক্তারা। সংলাপটি রোববার (১০ জানুয়ারি) ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়।

এসডিজি প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সংলাপের সভাপতিত্ব করেন।

বাংলাদেশে ধান উৎপাদনের সঠিক প্রাক্কলনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই প্রাক্কলনের উপর ভিত্তি করেই নীতি-নির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নেন। সরকারের ধান-চাল মজুদ করার সক্ষমতা কম হওয়ার কারণে বেশিরভাগ সময়ই সরকারের পক্ষে বাজার প্রভাবিত করার সুযোগ থাকে না। এছাড়াও তূলনামূলক ছোট কৃষকের কাছে থেকে ধান-চাল সংগ্রহ করতে হবে।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন ছোট ও মাঝারি কৃষকের টিকে থাকার সক্ষমতা কম, তাই তাদের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল ও হাওর অঞ্চলের মোট নয়টি জেলা (গাইবান্ধা, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, সুনামগঞ্জ, মেহেরপুর, নীলফামারী, রংপুর, সিরাজগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম) থেকে প্রায় ৪০ জন কৃষক, কৃষাণী এবং কৃষি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই সংলাপে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

তারা বলেন, মিল মালিকরা আগেই ধান কিনে মজুদ করে রাখে, যে কারণে চালের দাম বাড়লেও কৃষক তার মূল্য পায় না। ধান চাষে খরচের তুলনায় কম দামে বিক্রি করতে হয়, তাই কৃষক ধান চাষ থেকে সরে আসছেন।

তারা আরও বলেন, সরকার যে ধান সংগ্রহ করেন সেখানে সবাই অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না। তাই কম দামে মিল মালিকের কাছে বিক্রি করতে হয়।

কৃষিখাতে অনেকে ধান চাষ থেকে উচ্চমূল্যের ফল-ফসলের দিকে ঝোঁকায় এবং চাষযোগ্য জমি কমে আসায় ধান চাষের ক্ষেত্রে সংকট তৈরি হচ্ছে। সরকারি গুদামে ছোট কৃষকদের ফসল সংরক্ষণ করার সুযোগ করে দিতে হবে যেন ফসলের সঙ্গে সঙ্গে কৃষককে অল্প দামে ফসল বিক্রি না করতে হয়।

বাজারে চালের দাম বাড়লেও এই বাড়তি দামের কারণে কৃষক লাভবান হয় না বলে মনে করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা ইস্টিটিউটের (বিআইডিএস সাবেক গবেষণা পরিচালক ড. এম আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, কৃষক অনেক আগেই কম দামে ধান বিক্রি করে দেয়।

বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, সরকার প্রকৃত কৃষকের থেকে চাল না কিনে মিলারদের কাছ থেকে কিরছে, তাই কৃষক উপকৃত হচ্ছে না।