করোনায় এবার বিক্রি হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও!

বিশ্বব্যাপী এক আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। এর প্রভাবে বিশ্বজুড়ে অবর্ণনীয় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। বন্ধ হয়েছে বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠান।

করোনা শিখিয়েছে অনেক কিছু। এর কারণে অভাব-অনটন, চরম অর্থনেতিক বিপর্যয়সহ নানা অভিজ্ঞতা হয়েছে বিশ্বব্যাসীর। কিন্তু, পণ্যের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিক্রি হবে এমনটা কেউ কখনও ভাবেনি। লকডাউনে বন্ধ থাকায় ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে এক বছরে বিক্রির খাতায় নাম লিখিয়েছে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পেশা বদলাতেও বাধ্য হন অনেক শিক্ষক।

২০২০ এর এপ্রিল। লকডাউনে পুরো দেশ। বিশ্বজুড়েই মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম। তখন এমন এক ঘটনার মুখোমুখি হয় জাতি, যা কল্পনা করেনি কেউ। রাস্তার দেয়ালে দেখা যায়, স্কুল বিক্রির বিজ্ঞাপনের ছবি। ফার্নিচারসহ বিক্রি হবে স্কুল। ৮ বাই ১২ ইঞ্চি কাগজের এই বিজ্ঞাপন নাড়া দেয় এক লাখ ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের বাংলাদেশকে। লকডাউনে খরচ মেটাতে না পেরে, একই পথে হাঁটেন আরও অনেকে।

বিক্রির বিজ্ঞাপন না দিলেও, অনেক স্কুল বন্ধ করতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ। রাজধানী ছেড়ে অনেকের ঠিকানা হয় গ্রামের বাড়ি। সব মিলিয়ে করোনায় বন্ধ হয়েছে অন্তত ১০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নতুন বছরেও ধুকছে, হাজার-বিশেক স্কুল।

আর কর্মক্ষেত্রের যখন করুন হাল, তখন শিক্ষকরাও বাধ্য হয়েছেন পেশা বদলাতে। করোনা দেখিয়েছে, চক-ডাস্টার ছেড়ে পেটের দায়ে হাতে কোদাল তুলে নেওয়া শিক্ষক। কেউ হয়েছেন মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী, কেউবা ইজিবাইক চালক।

অনেক খাতে প্রণোদনা মিললেও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায় নিতে চায়নি কেউই।

শিক্ষা এখন আর জ্ঞানচর্চার বিষয় নেই। এর পুরোটাই বাণিজ্য। মানের চেয়ে বছরের পর বছর যখন সংখ্যা দিয়ে উন্নতির বিচার করা হবে, তখন এমন মহামারী পরিস্থিতিতে বন্ধ হবে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সম্মান হারাবে শিক্ষকতার মত মহান পেশা।