ফ্লোরিডার সমুদ্র সৈকতে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে মানুষের ঢল, গ্রেফতার ১৫০

মহামারী করোনার মধ্যেই বসন্তের হাতছানির উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছেন আমেরিকানরা। বিশেষ করে ফ্লোরিডার সমুদ্র সৈকতে গত দুদিনে আপামর জনতার বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারে করোনা নেই বলেই মনে হয়েছে। যদিও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে পুলিশী হস্তক্ষেপের কমতি ছিল না। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত পুলিশের সাথে সমুদ্র সৈকতে আসা নারী-পুরুষের দফায় দফায় সংঘর্ষে দেড়শত জন গ্রেফতার হয়েছে বলে ফ্লোরিডার পুলিশ প্রশাসন সোমবার জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, ফ্লোরিডায় এখনও সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে বেশি। এজন্য কর্তৃপক্ষ সোচ্চার রয়েছে স্বাস্থবিধি লংঘনকারীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু বছরাধিককাল স্বেচ্ছায় গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তির প্রত্যাশায় বেপরোয়া হয়ে পড়া যুবক-যুবতীরা ফ্লোরিডার সবকটি সমুদ্র সৈকতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন।

একই অবস্থা পরিলক্ষিত হয়েছে অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইটগুলোতেও। ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি এডমিনিস্ট্রেশন (টিএসএ) সূত্রে জানা গেছে, গত শনি ও রবিবার বিভিন্ন এয়ারপোর্টে ১৩ লাখের বেশি আমেরিকান আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে বেড়াতে গেছেন। গত মার্চে করোনার প্রকোপ শুরুর পর এই প্রথম কোন উইকেন্ডে এতবেশি যাত্রী বিমানে যাতায়াত করেছেন। যদিও ২০১৯ সালের মধ্য মার্চের তুলনায় এ সংখ্যা অর্ধেক। তবুও এয়ারলাইন্সসমূহে স্বস্তি ফিরেছে। অর্থাৎ মানুষের মধ্যে বিমানে চড়ার আগ্রহ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এবং এটা ঘটতে শুরু করেছে করোনার টিকা গ্রহণের পর। আর সবচেয়ে বেশি মানুষ উত্তর থেকে দক্ষিণে এবং পশ্চিম থেকে মধ্যাঞ্চলের স্টেটসমূহে যাচ্ছেন।

এদিকে সিডিসি সূত্রে বলা হয়েছে, গত ৯ সপ্তাহ যাবত করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমছে। সংক্রমণের হারও সন্তোষজনকভাবে কমছে। এসব বিষয় জনজীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। কেউই আর ঘরে আবদ্ধ থাকতে চাচ্ছেন না। বিশেষ করে উঠতি বয়সীরা টিকা পাবার পরই ভিন্ন এক আমেজে ভেসে বেড়াতে চাইছেন-অভিমত স্বাস্থ্য-বিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীদের।

জেগে উঠার এই প্রবণতায় স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা সম্ভব হলে করোনা নিয়ে আর কোন দুশ্চিন্তা থাকবে না বলে সিডিসি পরিচালক ড. রচেলে ওয়ালেনস্কি মন্তব্য করেছেন। তিনি সর্বসাধারণের প্রতি আকুল আহবান জানিয়েছেন, এমন আচরণ করা উচিত হবে না যার খেসারত হিসেবে আবারও লকডাউনে যেতে হতে পারে। লকডাউনের মতো অসহনীয় পরিস্থিতি কারোরই কাম্য হওয়া উচিত নয়।