ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞাপন বন্ধ করা প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কের মধ্যে বৈরিতা সৃষ্টি করবে

আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যম হাতে হাত রেখে এগোচ্ছে। ব্যাংকার ও গণমাধ্যমকর্মী এ দুটি গ্রুপই করোনা মহামারীর সম্মুখ যোদ্ধা। বিজ্ঞাপন কম থাকলে কম দেবে তা অনুমেয়। কিন্তু এ দুর্যোগে ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞাপন বন্ধ করা এ দুই প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কের মধ্যে বৈরিতা সৃষ্টি করবে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়শন অব ব্যাংকস (বিএবি) বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাংক খোলা থেকে সেবা দিতে হয়, গণমাধ্যমকর্মীদেরও নিয়মিত তথ্যসেবা দিতে হয়। ব্যাংকগুলো তাদের ব্র্যান্ডিং কিংবা নতুন সেবা আনলে সে সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। তাদের প্রোডাক্ট কম থাকলে বিজ্ঞাপন কম দিত বা না দিত। সেটা নিয়ে তো কোনো মন্তব্য থাকতে পারে না। কিন্তু যখন ঘোষণা দিয়ে জানানো হয় তখন দুটি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতার সম্পর্কে ফাটল ধরে।

আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে গণমাধ্যমের প্রণোদনার বিষয়টি তুলে ধরেছিলাম। তার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রির জন্য যে বরাদ্দ সেখানে গণমাধ্যমও আবেদন করতে পারে। কিন্তু এ প্রণোদনা গণমাধ্যমের টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট নয়। পত্রিকার মাধ্যমে করোনা ছড়ায় এমন অহেতুক ভীতি তৈরি হওয়ায় সার্কুলেশনে খানিকটা আঘাত এসেছে। সার্কুলেশনে আঘাত আসায় বিজ্ঞাপনেও আঘাত এসেছে। পত্রিকা এ করোনার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন। বিনোদনভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেলগুলো নতুন কোনো অনুষ্ঠান তৈরি করতে পারছে না। তারাও আক্রান্ত হচ্ছে আর্থিক ক্ষতির।

নিউজ চ্যানেলগুলো নিয়মিত খবর সরবরাহ করছে। কিন্তু নিয়মিত কার্যক্রম ও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান সচল না থাকায় তারাও সাবান আর হ্যান্ড স্যানিটাইজার ছাড়া কোনো বিজ্ঞাপন পাচ্ছে না। এ অবস্থায় গণমাধ্যম সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত একটা খাত বলে আমি মনে করছি। এখানে অসংখ্য সংবাদকর্মী জড়িয়ে আছেন। কিন্তু এ খাতে প্রণোদনা স্পষ্ট নয়। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেমন পাচ্ছে এ খাত পাচ্ছে না। সংবাদকর্মীরা প্রথম সারির যোদ্ধা হলেও তাদের বীমা, আক্রান্ত হলে সেবার ব্যাপারে সরকারি কোনো উদ্যোগও চোখে পড়ছে না।

মোজাম্মেল বাবু, এডিটরস গিল্ডের সভাপতি, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো)-এর সিনিয়র সহসভাপতি এবং একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক।