‘জামা কাপড় না ছাল চামড়া খুলে মানুষকে দেখাবো’

পাইছি তোরে । তোর এখন কেবল জামা কাপড় না ছাল চামড়া খুলে মানুষকে দেখাবো ।এত দিনে পাইছি। এমন পৈশাচিক আনন্দ বোধ করে না বাঙালী এমন মানুষ হারিকেন দিয়ে খুঁজলে ২/১ জন মিলবে হয়তো। কিন্ত বাকি সবার সেই পৈশাচিকতা এত ভয়ঙকর যে বিপদে পড়া সে্ই মানুষের দম বন্ধ হয়ে মরে যাওয়ার অবস্থা।

কয়দিন ধরে দেখছি ফেসবুক আর অনলাইন পোর্টালের কিছু মানুষ ব্যপক আনন্দ খুজে পাচ্ছে সামিয়া রহমানকে নিয়ে। সামিয়া রহমান। মূহূর্তে চিনে ফেলা এই নামের উপর ময়লা আবর্জনা, কাঁদা , যত প্রকার কুৎসিত জিনিস আছে সব ছড়ানো হচ্ছে। অভিযোগ- তিনি দার্শনিক মিশেল ফুকোর লিখা ‘চুরি’ করেছেন। ওহ মাই গড, ও মাই গড। কি সব্বোনাশ। সবার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। কি ভয়াবহ অপরাধ।! কি ভয়াবহ!। পুরো দেশ ধ্বসে গেলো। এমনভাবে সবাই রিএ্যাক্ট করছেন যে মনে হচ্ছে যে তাদেরই জাত সম্মান সব চলে গেছে।

ভাই ঘটনা কি আসলেই সবাই জানেন? তার সাথে আরো একজন লেখক এই প্রকাশনায় ছিল এই লেখায় অন্যান্য reference থাকলেও দুই তিনটা reference বাদ পড়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যা নিয়ে তদন্ত চলছে …

সামিয়া রহমানের একক লিখা কয়টা বই আছে জানেন নাকি ভাই? তিনি সবগুলোতে প্রথম শ্রেণী পাওয়া শিক্ষার্থী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক। এমন শিক্ষক হয়তো অনেকে আছেন কিন্তু পুরো মিডিয়ার দিকে একবার তাকান। ২০ বছরে দ্বিতীয় সামিয়া রহমান তৈরী হয়নি। অথচ চ্যানেল ৪০ টা। একজন সামিয়া রহমান হয়ে উঠতে একজন মানুষকে কত শ্রম, কত সময় কত মেধা খরচ করতে হয় জানেন নাকি কেউ ভাই? এই সামিয়া কোনো জার্নালে প্রবন্ধ লিখে তৈরী হয়নি। তাহলে কেনো একটা অভিযো্গ তুলে তার পুরো ক্যারিয়ার যুগ ধরে গড়ে তোলা সম্মান নষ্ট করা?

সম্মান আমরা কাউকে কখনও এনে দেইনা।সারাদিন কেবল টেনে নামানোর চেষ্টাই করি। যেহেতু সম্মান এনে দেই না। সেহেতু তার সম্মান কেড়ে নেয়ার অধিকার আমাদের কে দিলো? অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগে তো খুনীকেও খুনী বলা যায়না। তার সাথে নানা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থাকতে পারে, হিংসাও।কিন্তু সমাজের একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে এতখানি অসম্মানিত করার আগে একটু বোধহয আমাদের ভাবা দরকার।

যে মানুষটি এমন ঘটনার মুখে পড়েছে তার মনের অবস্থাটা চিন্তা করুন। দুনিয়ার সবাই যদি তাকে সমর্থন করে তারপরও তিনি ভয়াবহ সময় কাটাচ্ছেন। সেখানে এমন কাঁদা ছুড়া ছুড়ি করে আমরা নিজের নিচুতা ছাড়া আর কিছুই প্রকাশ করছি না।

গোদের উপর বিষ ফোড়ার মতো কিছু দেখানো মানুষ জুটেছেন। যারা ম্যালেরিায়ার বাহকেরর মতো এইসব নোংরােআবার বয়ে নিয়ে তার গায়ে নিয়ে ফেলছেন। স্ত্র্রিন শট পাঠাচ্ছেন তাকে নানা নোংরা মন্তব্যের । আসলেই তারা কি সামিয়া রহমানের বন্ধুু?বন্ধু যারা তার নোংরা থেকে আগলে রাখে। তা বহন করে গায়ে ফেলে না।

এইসব নোংরামী বন্ধ করেন ভাই। হাত জোড় করি। নিজের দিকে তাকান। দেখেন অনেক অন্যায় , অনেক ‘চুরি’ আপনার নিজেরও আছে। কেবল আপনি লাকি বলে সেটি এখনও কারো নজরে আসেনি। সামিয়া রহমানের অভিযোগ প্রমানতি হতে দিন। এই টুকুু ধৈর্য্য ধরেন।

“উল্লেখ্য অংশটুকু নাজনিন মুন্নীর ফেসবুক থেকে নেওয়া”  

 

বাংলাদেশ সময় : ১৬০২ ঘণ্টা, ১০ অক্টোবর,  ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/ডিএ