মহামারী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায়ও সক্ষম ব্যানকোভিড: গ্লোব বায়োটেক

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায়ও সক্ষম হবে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের আবিষ্কৃত করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন \”ব্যানকোভিড\” দাবি করে বলছে প্রতিষ্ঠানটি।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য দায়ী \”ডি ৬১৪জি ভ্যারিয়েন্ট\” এর বিরুদ্ধে ব্যানকোভিড প্রথম ও একমাত্র আবিষ্কৃত টিকা বলে দাবি করেছে গ্লোব বায়োটেক।

সোমবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে ভ্যাকসিনটির গবেষণার অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয় প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে।

এর আগে, সংবাদ সম্মেলন করে গ্লোব জানিয়েছিল, তাদের ভ্যাকসিন প্রাণীদেহে প্রয়োগের প্রথম ধাপে সাফল্য পেয়েছে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি দাবি করছে, তাদের ভ্যাকসিন প্রাণীদেহে দ্বিতীয় দফায় প্রয়োগেও মিলেছে সাফল্য। জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার গবেষণা নিবন্ধ ছাপানোর প্রিপ্রিন্ট সার্ভার ‘বায়ো আর্কাইভে’ তাদের এই সাফল্যের খবর প্রকাশিত হয়েছে বলে জানানো হয়। গ্লোবের গবেষকরা জানান, তাদের ভ্যাকসিন প্রাণীদেহে অ্যান্টিবডি তৈরির মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

এমন পরিস্থিতিতে গ্লোব বায়োটেকের ‘সাফল্যে’র এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকের সাফল্য কামনা করলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ো আর্কাইভ কোনো স্বীকৃত জার্নাল নয়, এখানে ‘পিয়ার রিভিউ’য়ের কোনো সুযোগ নেই। ফলে এখানে প্রকাশিত কোনো নিবন্ধকে বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুযোগ নেই। বায়ো আর্কাইভের ওয়েবসাইটেও ঠিক একই কথাই লেখা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের গবেষণা ও উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি) বিভাগের প্রধান ড. আসিফ মাহমুদ সারাবাংলাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানান, তারা তাদের ভ্যাকসিনের নাম দিয়েছেন ‘ব্যানকোভিড’, যা মূলত ডি৬১৪জি ভ্যারিয়েন্টস এম-আরএনএভিত্তিক ভ্যাকসিন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এই ঘরানার মধ্যে ‘ব্যানকোভিড’ই প্রথম ভ্যাকসিন। আর এটিই প্রাণীদেহে দ্বিতীয় ধাপে প্রয়োগ করে সাফল্য মিলেছে। কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরি পরিচালিত ‘বায়ো আর্কাইভ’ সার্ভারে তাদের এ সংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধ ছাপা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যেকোনো গবেষণার ফল নিবন্ধ আকারে কোনো ‘পিয়ার রিভিউড’ জার্নালে প্রকাশ পেলে তবেই সেটিকে গ্রহণযোগ্য করা হয়। ‘পিয়ার রিভিউড’ জার্নালে কোনো গবেষণা প্রতিবেদন বা নিবন্ধ প্রকাশের আগে জমা দিলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা (রেফারি নামে ডাকা হয়) সেটি পর্যালোচনা করেন। গবেষণার প্রস্তাবনা থেকে শুরু করে গবেষণা পদ্ধতি, ফলাফল বিশ্লেষণের প্রক্রিয়াসহ গবেষণার যেকোনো ধাপ নিয়ে কোনো ধরনের প্রশ্ন থাকলে তা উত্থাপন করেন তারা। তাদের সেসব প্রশ্নগুলোর মীমাংসা করার পরই কেবল স্বীকৃত ‘পিয়ার রিভিউড’ জার্নালগুলো গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করে থাকে। ফলে সেগুলোর গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন থাকে না।

Scroll to Top