বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার জন্যই জিয়াকে আবিষ্কার করা হয়ঃ নানক

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক মন্তব্য করে বলেছেন যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতেই সামরিক জান্তা জিয়াউর রহমানকে আবিষ্কার করা হয়েছিল।

আজ রবিবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে কৃষক লীগের আয়োজিত ‘কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে শীতবস্ত্র বিতরণ ও আলোচনা সভার’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।

কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ১৯৭১ সালের প্রতিশোধের লক্ষ্য নিয়ে জাতির পিতারকে হত্যা করা এবং হত্যা করার পর ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করে সামরাজ্যবাদ ও পাকিস্তানী শক্তি। শুধু তাই নয়, তারা তার নামকে মুছে ফেলার জন্য তার বিপরীতে সাময়িকযান্তা জিয়াউর রহমানকে আবিস্কার করে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানোর চেষ্টা করেছিল।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আরো বলেন, ‘১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বেলা ১টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন। পাকিস্তানী বন্দিদশা থেকে বিজয়ী বেশে ফিরে আসেন বাঙ্গালীর এই মহানায়ক। বিকালের ঐতিহাসিক রেইসকোর্স ময়দানে জাতি উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। বাংলাদেশের আদর্শগত ভিত্তি কী ধরনের হবে? রাষ্ট্রের কাঠামো কী ধরনের হবে? পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যারা দালালী করেছে-তাদের কী হবে? এসব বিষয়সহ বিভিন্ন দিকনিদের্শনা দিয়েছিলেন।’

নানক বলেন, ‘আজ থেকে ৫০ বছর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছেন। সেই স্বপ্ন তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করছেন। দেশের মানুষ মনে করে তার হাতে দেশ, দেশের সার্বভোমত্ব ও জাতির সম্পদ যে নিরাপদ। তিনি জেগে আছেন বলেই জাতি নিশ্চিতে ঘুমাতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে র‌্যাকিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ করে যাদেরকে আমরা পরাজিত করেছি তারাই আজ আমাদের অনুসরণ করতে চায়। জননেত্রী শেখ হাসিনার ধারাই একের পর এক মেগাপ্রজেক্ট বাস্তবায়ন হচ্ছে। এরপর নিচ্ছেন নতুন নতুন মেগাপ্রজেক্ট। তার দূরদর্শী চিন্তায় সুশাসনের ফলে দেশের গ্রামগুলো একেকটি শহরে রূপান্তরিত হয়েছে। গ্রামে এখন গবির খুঁজে পাওয়া যায় না। দেশ থেকে মঙ্গা শব্দটি পালিয়ে গেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির মহানায়ক আজ শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের পরিবর্তিত রূপে যারা আছে, বিএনপি-জামায়াতসহ আজকে যারা মৌলবাদী ধর্মান্ধ, জঙ্গিবাদীর পৃষ্টপোষক, সেই অপশক্তিরা আজও বসে নেই। তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। তারা বিভিন্ন ভাবে অপকর্ম করছে।’

তিনি আরো বলেন, বিএনপি আজকে রাজনীতির নামে আওয়ামী লীগ সরকারের পটপরিতর্বনের জন্য ষড়ন্ত্র করছে। জঙ্গিবাদের মদদ দিয়ে তারা রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব যতদিন থাকবে ততদিন বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। কোনো অপশক্তিকে বাংলার ১৭ কোটি মানুষ কোনো প্রশ্রয় দিবে না। বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটুর পরিচালনায় আলোচনা সভায় কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

আলোচনাসভা শেষে কৃষকদের মাঝে শীতবস্ত্র সামগ্রী বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের অতিথিরা।