প্যান্ট পরে ‘ছোটলোকি’ ছাড়েন তিনি!

লুঙ্গি বাদ দিয়ে যেদিন তিনি প্রথম প্যান্ট পরা শুরু করেন, সেদিন থেকে ‘ছোটলোকি’ কাজ ছেড়ে দেন। ছয় বছর বয়সে টেম্পোচালকের সহকারী হিসেবে তাঁর ‘ক্যারিয়ার’ শুরু। দুই বছর পর মাছের আড়তে শ্রমিক হিসেবে যোগ দেন। কিন্তু তত দিনে নামের সঙ্গে ‘টেম্পো’ পদবি জুটে যায় তাঁর। ইসমাইল হোসেন হয়ে ওঠেন টেম্পো ইসমাইল।

১৬-১৭ বছর বয়সে নিয়মিত প্যান্ট পরা শুরু করেন ইসমাইল। এরপর থেকে ছোটলোকি কাজ ছেড়ে দেন তিনি। এখন বয়স ২৮। এই বয়সেই তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, অস্ত্র ও মাদকের ৩০টি মামলা হয়েছে। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের তালিকায় নাম উঠিয়েছেন। তবে চট্টগ্রামে তাঁর পরিচিতি শীর্ষ চাঁদাবাজ হিসেবে। তাঁর নাম শুনলেই ভয়ে চাঁদা দিয়ে দেন লোকজন। পুলিশের উপস্থিতিতে ইসমাইল নিজেই সংবাদমাধ্যমকে এসব কথা বলেন।

২০০৯ সালে ইসমাইলের বিরুদ্ধে প্রথম মারামারির মামলা হয়। এর পর দ্রুত বাড়তে থাকে মামলার সংখ্যা। কখনো এক মাস আবার কখনো এক বছর পর জামিনে বেরিয়ে আবার একই কাজে জড়িয়েছেন। যেসব ব্যবসায়ীর কাছে তিনি মুঠোফোনে চাঁদা চেয়েছেন, তাঁদের সবাইকে কথার শেষে বলতেন, ‘আমার কিন্তু জানের মায়া নাই।’

কারাগারে থাকলেও চাঁদা তুলতে কখনো অসুবিধা হয়নি ইসমাইলের। নিজের অনুসারীদের পাশাপাশি তাঁর মা জাহানারা বেগমও ছেলের নামে চাঁদা তুলতেন বলে জানায় পুলিশ। শুধু মা-ছেলে নয়, ইসমাইলের আরও তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। দুই ভাই কারাগারে। মা ও এক ভাই পলাতক।

চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, টেম্পো বাহিনীতে ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছেন। টেম্পোর নাম শুনলেই টাকা দিয়ে দিত লোকজন। কথায় কথায় গুলি করা তাঁর নেশা।

অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন তিনি-

গত শনিবার রাতে চট্টগ্রামের হিলভিউ আবাসিক এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পাঁচ সহযোগীসহ ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে দুটি এলজি, চারটি চাপাতি ও দুটি ছোরা উদ্ধার করে পুলিশ। মামলায় গতকাল রোববার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। এ নিয়ে দশমবারের মতো ইসমাইল কারাগারে গেলেন বলে জানায় পুলিশ।

গতকাল পুলিশের উপস্থিতিতে ইসমাইল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, চাঁদার টাকা তুলতে সময় লাগে। কিন্তু দুই-তিন মিনিটের মধ্যে একটি ছিনতাই করা যায়। তবে ছোটখাটো ছিনতাই তিনি করেন না। কুমিল্লা থেকে ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে নিজের জন্য কেনা একটি পিস্তল সব সময় সঙ্গে রাখেন। তিনি বলেন, ছিনতাই কিংবা চাঁদাবাজিতে ১ লাখ টাকা পেলে নিজে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা রাখেন। বাকি টাকা সহযোগীদের ভাগ করে দেন। সূত্রঃ প্রথম আলো 

বাংলাদেশ সময় : ১৪০৭ ঘণ্টা, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/ডিএ