বাবা আব্দুর রশিদ। পেশায় রিক্সাচালক। মা আরফা খাতুন গৃহিণী। চার ভাই বোনের মধ্যে বড় দুই বোনকে এইচএসসি পাশের পর তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন। ছোট বেলা থেকে অভাব-অনটনের সংসার। তারপরও দারিদ্র্যতায় থেমে থাকেননি একমাত্র ছেলে জুয়েল আহমেদ।
দারিদ্রতাকে পেছনে ফেলে পড়াশুনা চালিয়ে গেছেন। টাকা না থাকায় টিউশনি করে ২০১৫ সালে দাখিল পরীক্ষায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বায়তুন নূর আলিম মাদ্রাসা থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পান। এরপর ভর্তি হন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে। সেখান থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে পান ৪ দশমিক ৮৩। তারপর শুরু হয় তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যুদ্ধ। সেই পরীক্ষাও সে উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’ ইউনিটের ১৫১৫ নাম্বার মেধা তালিকায় রয়েছেন। আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে তাকে বিষয় পছন্দ করতে হবে। তারপর ভর্তি।
কিন্তু এবার মনে হয় তাকে অর্থের কাছে হেরেই যেতে হচ্ছে! ভর্তির জন্য তার প্রয়োজন প্রায় ১৩ হাজার টাকা। কিন্তু তার রিকশাচালক বাবার পক্ষে এই টাকাও দেওয়া সম্ভব নয়। এমনকি ভর্তি হলে সে কিভাবে তার পড়া-শোনা খরচ চালাবেন তাও তিনি জানেন না। জুয়েলের বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, বাপ আমরা নিজেরাই তো ভালা খাইতে পারি না। হ্যারে আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করামু ক্যামনে? অহন নাকি ভর্তি অইতেই ১৩ হাজার টাকা লাগে। অত টাকা আমরা কই পামু?
জুয়েলের স্বপ্ন সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে অনেক বড় হবে। দেশের জন্য কিছু করবেন। জুয়েল বলেন, দুই চোখে অন্ধকার দেখছি। দরিদ্র মা-বাবার পক্ষে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করানোর মত সামর্থ্য নেই। এই অভাব-অনটনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া সম্ভব হবে কী না জানি না। সুযোগ পেয়েও ভর্তি নিয়ে আমি অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি।
আব্দুর রশিদ জানান, ছেলেকে ঢাবিতে ভর্তি করার মত অর্থ এখন তার হাতে নেই। কীভাবে টাকা জোগাড় করবেন তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছেন। আর ভর্তি করা গেলেও পরবর্তীতে কীভাবে ছেলের পড়াশোনার খরচ জোগাবেন সে চিন্তাতেও কপালে ভাঁজ পড়েছে তার।
তিনি বলেন, জুয়েলকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করার জন্য কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি বা সংস্থা যদি সহযোগিতার হাত বাড়ান, তাহলে সে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবে। সেই সঙ্গে পূরণ হবে ছেলের ইচ্ছে। মুঠোফোনে আব্দুর রশিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা যাবে এই নাম্বারে ০১৭৬৫৪৬০৮৪২।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, ২৬ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস পি