১২ থেকে ৩০ হাজার টাকায় করোনা মুক্ত করছিলেন ‘করোনা বাবা’, অতঃপর…

গোটা বিশ্বেই তাণ্ডব চালাচ্ছে মহামারী করোনা। প্রতিদিন নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙছে প্রাণঘাতী করোনা। আর এই পরিস্থিতিতেও দেশে দেশে জালিয়াতি করে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত এক শ্রেণির মানুষ। একে তো কোনও প্রতিষেধক এখনও পূর্ণ মাত্রায় আবিষ্কার হয়নি। সেইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে ভিত্তিহীন নানা পোস্ট। এমনকী করোনাভাইরাস সারিয়ে দেওয়ার কথাও বলছেন কেউ-কেউ। কেউ অর্থের বিনিময়ে দিচ্ছেন করোনা-নেগেটিভ সার্টিফিকেট, কেউ বা মুহূর্তে করোনা থেকে মুক্তির কথাও জানাচ্ছেন। আর তা করতে গিয়েই এবার গ্রেফতার হলেন ভারতের এক স্বঘোষিত ধর্মগুরু।

ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের হায়দরাবাদে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৫০ বছর বয়সী ওই স্বঘোষিত ধর্মগুরুর নাম ইসমাইল। ইদানীং নিজেকে ‘করোনা বাবা’ নামেই বেশি পরিচয় দিচ্ছেন তিনি। সঙ্গে রেখেছেন সেলিম নামে এক শাগরেদকে। অভিযোগ, এই দু’জনেই করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের আতঙ্ককে কাজে লাগিয়ে রীতিমতো ব্যবসা খুলে বসেছেন। তার কাছে আসলেই নাকি করোনা থেকে মুক্তি, এভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসমাইল ও তার দলবল প্রচার করতে থাকে নাগাড়ে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা লিখতে থাকে করোনা থেকে ‘মুক্তির’ উপায় তাদের করায়ত্ত। আর এই মুক্তির উপায় জানাতে নাকি দিতে হবে হাজার-হাজার টাকা। অভিযোগ, কারও থেকে ওই ‘করোনা বাবা’ নিয়েছেন ১২ হাজার টাকা, কারও থেকে বা ৩০ হাজার! সম্প্রতি হায়দরবাদের হাফিরপেট এলাকা থেকে এমনই নানা অভিযোগ আসতে শুরু করে। এরপরই আসরে নামে পুলিশ।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এই স্বঘোষিত ধর্মগুরুর ‘ব্যবসা’ নতুন নয়। করোনার আগেও নানা সময়ে সে মানুষের জ্বরজারির সুযোগ নিয়ে হাজার হাজার টাকা কামিয়েছে। করোনা আবহে সেই ব্যবসা রীতিমতো ফুলেফেঁপে ওঠার জোগাড়। কিন্তু সম্প্রতি এক ব্যক্তি নিজে থেকে এগিয়ে এসে ওই ধর্মগুরু ও তার শাগরেদদের বিরুদ্ধে মুখ খোলে, অভিযোগ দায়ের করে নিজে জবানবন্দি দেয়। এরপরই পুলিশ ওই ধর্মগুরু ও তার দলবলকে গ্রেফতার করে। সেইসঙ্গে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদনও করা হয়, কেউ যেন কোনও বুজরুকিতে কান না দেন।

গত মার্চ মাসে উত্তরপ্রদেশে এমনই এক ভুয়ো স্বঘোষিত গুরুর খোঁজ মিলেছিল। যিনি দাবি করে আসছিলেন, করোনা থেকে মুক্তির উপায় তার জানা আছে। কি সেই মুক্তির উপায়? সাহায্যের জন্য মানুষ তার কাছে এলেই, তিনি ১১ টাকা মূল্যের একটি তাবিজ ধরিয়ে দিতেন। বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পরই ওই স্বঘোষিত গুরুকে গ্রেফতার করা হয়।