‌‘ফণী’ এখন ঢাকায়, দুপুরের পর ভারী বৃষ্টি

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ এখন বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের স্থলভাগে (চুয়াডাঙা, রাজবাড়ি, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, টাঙ্গাইল অঞ্চলে) অবস্থান করছে। ধীরে ধীরে এটি উত্তর-পূর্ব দিকে আরও অগ্রসর হচ্ছে। অগ্রসর হয়ে ঢাকা, পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ -এসব অঞ্চলে এটি আরও ৫-৬ ঘণ্টা অবস্থান করবে। এ সময় এটি ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। পরে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিক হয়ে ভারতের আসাম মেঘালয়ে প্রবেশ করবে। এর গতি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার।

এদিকে ‘ফণী’র প্রভাবে আজ শনিবার সারা দিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। তবে দুপুরের পর থেকে রাজধানী ঢাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এর আগে সকাল ৬টার দিকে সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ‘ফণী’। এর পর এটি দেশের উত্তর ও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামছুদ্দীন আহমেদ জানান, গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে সারা রাত ঢাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। তবে আজ দুপুরের পর থেকে এই বৃষ্টির মাত্রা আরও বাড়বে।

তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়াসহ দেশের মধ্যাঞ্চল দিয়ে একেবারের ভারতের মেঘালয়ের দিকে চলে যাবে। এ কারণে ঢাকাতেও আজ ভারী বৃষ্টি হবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশের মতো এ বিভাগেও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে।

বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কমে গেছে উল্লেখ করে পূর্বাভাসে বলা হয়, আজ তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো কমতে পারে। গতকাল সকাল ছয়টা থেকে আজ সকাল ছয়টা পর্যন্ত ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ৬০ মিলিমিটার।

এদিকে ফণীর প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকেই সারা দেশে থেমে থেকে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে ঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটারে পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদসংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদসংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমূদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

তবে রোববার বিকেলের পর থেকে আবহাওয়া পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হবে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে নিরাপদে আশ্রয়ে থাকতে অনুরোধ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।