করোনা সময়ে সাংবাদিকদের ঝুঁকিভাতা ও বেতন পরিশোধের আহ্বান ডিইউজের

এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ার পরেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের গত মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ না করায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। একই সঙ্গে করোনা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের ঝুঁকিভাতা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

ডিইউজের দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস সোহেল স্বাক্ষরিত এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।

ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বিবৃতিতে ইতোমধ্যে সারাদেশে ১৬ জন সাংবাদিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে ৯ জনই ঢাকার। অনেকের পরিবারের সদস্যরাও এই ভাইরাসে আক্রান্ত। প্রচণ্ড স্বাস্থ্যঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে কাজ করে গেলেও বহু গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এখনও সাংবাদিক-কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি পরিশোধ করেনি।

‘এমনকি বহু প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিনের বকেয়াও আটকে আছে। দেশের প্রচলিত এবং শ্রম আইনে যা অন্যায়, অমানবিক ও অপরাধের শামিল। উপরন্তু নানা অজুহাত দেখিয়ে কয়েকটি দৈনিকের প্রিন্ট ভার্সন ইতোমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান আবার বেতন কমিয়ে আনারও পাঁয়তারা করছে।’

বিবৃতিতে তারা বলেন, ডিইউজে দাবি জানাচ্ছে- দুর্যোগকালীন সময়ে কর্মরত সাংবাদিকদের প্রতি কর্মদিবসের জন্যে বাড়তি একদিনের সমপরিমাণ ঝুঁকিভাতা গণমাধ্যম মালিকদের দিতে হবে। নিকট অতীতেও হরতালের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দায়িত্ব পালনকারীদেরও ঝুঁকিভাতা দেওয়া হতো।

বিবৃতিতে করোনা ভাইরাসের জন্য দেশব্যাপী ছুটি চলাকালে সাংবাদিকদের নিরাপদে কমর্স্থলে আনা নেওয়ার জন্যে পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করার দাবিও জানান ডিইউজের নেতারা।

নেতারা বলেন, করোনা ভাইরাসের মতো ভয়ঙ্কর দুর্যোগ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সাপোর্ট ছাড়া সাংবাদিকরা শত ঝুঁকির মধ্যেও কাজ করছেন কেবল পেশাগত দায়িত্ববোধ, পরিবারের ভরণপোষণের আর্থিক সুরক্ষা, প্রতিষ্ঠানের সুনাম বৃদ্ধি ও রাষ্ট্রের কথা ভেবে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, ইতোমধ্যে দেড় মাস পার হয়ে যাওয়ার পরেও বেশিরভাগ গণমাধ্যমে এখন পর্যন্ত মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়নি।

‘অথচ সবাই অবগত রয়েছেন করোনা ভাইরাসের পরিপ্রেক্ষিতে জীবনযাত্রার প্রাত্যাহিক ব্যয় অনেকাংশে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। প্রতিটি দিন পার করতে হিমশিম খাচ্ছেন বেশিরভাগ সাংবাদিক পরিবার। তার মধ্যে আবার যারা কিছুটা অসচ্ছল ও কম বেতনধারী, তাদের অবস্থা খুবই বেদনাদায়ক ও নাজুক।

এই দুর্বিসহ অবস্থায় মার্চ মাসের বেতন এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে বকেয়াসহ পরিশোধ করা না হলে, ডিইউজে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়াসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে বিষয়টি অবগত করতে বাধ্য হবে।