অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমানের মৃত্যুতে আমরা একজন অভিভাবক হারালাম

প্রবীণ রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বরেণ্য আইনজীবী, জেলা নাগরিক আন্দোলন ও ময়মনসিংহ বিভাগ উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আনিসুর রহমান খান ছিলেন আমাদের গর্বিত একজন অভিভাবক। তার মৃত্যুতে আমরা একজন অভিভাবককে হারালাম।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহে মরহুমের জানাজায় অংশ নিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমানের সামনেই আমরা ছোট থেকে বড় হয়েছি। আমাদের বাপ-চাচাদের সমসাময়িক রাজনৈতিক নেতা ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একনিষ্ঠ অনুসারী। প্রতিমন্ত্রী মরহুম আনিসুর রহমানের আত্মার শান্তি কামনা এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

সূত্র মতে, বুধবার বিকেলে নগরের পন্ডিতপাড়াস্থ নিজ বাসায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, পাঁচ ছেলে ও এক মেয়েসহ স্বজন এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

অ্যাডভোকেট আনিসুল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৬৩ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এরপর ১৯৬৪ সালের বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের ট্রেজারার নির্বাচিত হন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে গারোহিল ডিস্ট্রিক্ট মহাদেব ইয়ুথ ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পেশাগত কাজের পাশাপাশি প্রবীণ এ আইনজীবী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনেরও নেতৃত্ব দেন। তার নেতৃত্বেই ১৯৮৯ সালের ১৬ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলন ও উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই সংগঠনের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও ময়মনসিংহ বিভাগ বাস্তবায়ন কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি জেলা সভাপতিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান।

পারিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা আইনজীবী সমিতিতে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দুপুর ১২টায় জুবলীঘাটস্থ জেলা নাগরিক আন্দোলন কার্যালয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন জানানোর জন্য রাখা হয় তার মরদেহ। বাদ জোহর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে গুলকিবাড়ি কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয় এ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।