‘একটি সিদ্ধান্তই সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে’ : প্রধানমন্ত্রী

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’,- নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু দৃশ্যমান করতে পারায় আজকে বিশ্বে সেটা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে বাংলাদেশ- এই একটি সিদ্ধান্তই সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ আর পরনির্ভরশীল নয়।’

গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সভাপতিত্বকালে দেওয়া প্রারম্ভিক ভাষণে তিনি এসব কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। এটাই ইংরেজি নতুন বছর ২০২১ সালে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক।

পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রের জন্য কারও নাম উল্লেখ না করে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুসের প্রতি অভিযোগের তীর নিক্ষেপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পেছনে আমাদের দেশেরই স্বনামধন্য কিছু লোক জড়িত, যেটা আমাদের দুর্ভাগ্য। একটি ব্যাংকের সামান্য একটি এমডি পদের লোভে একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নে যেটি বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে, যে পদ্মা সেতু আমাদের দক্ষিণের ২২টি জেলার মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে জিডিপি প্রবৃদ্ধি শতকরা ২ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে সেটি বন্ধের ব্যবস্থা নিয়েছিল। যাহোক একটি আঘাত আসলে হয়তো মানুষ সচেতন হয় এবং নিজের কাজ করা শেখে, আমরা সেটাই শিখেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই আঘাতটা আসাতে আমরা হতাশ না হয়ে বরং সেটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দেই এবং যেটা আজকে বাস্তবে রূপ নিয়েছে।’

শেখ হাসিনা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ দীর্ঘকাল দেশ পরিচালনার সুযোগ পাওয়াতেই বাংলাদেশ আজ মর্যাদাপূর্ণ, স্বনির্ভর এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে উঠছে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘দীর্ঘদিন রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটা বিষয় সুস্পষ্ট হয়েছে যে, সমগ্র বিশ্ব এখন বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখছে; যেটি অতীতে ছিল না এবং বাংলাদেশ নাম বললেই ঝড়, বন্যা আর দারিদ্র্যের দেশ বলে বিশ্বে অনেকে মনে করতো। বিশ্বে এই বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আজকে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে, যা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চতুর্থবারের মতো ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করায় দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বলেই স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী যেমন উদযাপন করেছি, তেমনি সরকারে থেকেই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের এবং দেশের জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সীমিত সম্পদ ও বিশাল জনসংখ্যাকে কাজে লাগিয়েই তার সরকার দেশকে আত্মমর্যাদাশীল করে গড়ে তুলতে চায়। আমাদের যতটুকু আছে, তা নিয়েই দেশের যে বিশাল জনগোষ্ঠী রয়েছে তাদের কর্মক্ষম করে তুলব। আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে নিজেদের আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

সূত্র: বাসস