লকডাউনঃ অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলছে গণপরিবহন, সন্তুষ্ট যাত্রীরা

করোনা সংক্রমণ রোধে সোমবার (০৫ এপ্রিল) থেকে সারা দেশে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণার দু’দিন পর আজ তৃতীয় দিনে ফের রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। গণপরিবহনের ৬০ শতাংশ বাড়তি ভাড়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে সরকারি-বেসরকারি মালিকানাধীন গণপরিবহনের পাশাপাশি প্রাইভেটকার, জিপ, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, হিউম্যান হলার, ভ্যানগাড়ি ও রিকশা চলাচল করছে অবাধে।

ফলে গত দু’দিনের তুলনায় রাস্তায় যানবাহন-যাত্রীর সংখ্যাও বেড়েছে। পরিবহন বেড়ে ভোগান্তি কমায় সন্তুষ্ট যাত্রীরা।

আজ বুধবার (৭ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ দৃশ্য চোখে পড়ে।

রাজধানীর সদরঘাট, নয়াবাজার, গুলিস্তান, পল্টনমোড়সহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই বাসসহ অন্য গণপরিবহন চলাচল করছে। ৫০ সিটের বাসে ২৫ জনের বেশি যাত্রী ওঠানো হচ্ছে না। বাস তুলনামূলক কম থাকলেও বাসস্ট্যান্ডগুলোতে যাত্রীদের বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়নি। বাস যা আছে সেটা পর্যাপ্ত।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত ১৮ দফা বাস্তবায়নে ৫ এপ্রিল থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে লকডাউন শুরু হয়। নির্দেশনা অনুসারে জরুরি পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া রাস্তাঘাটে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ারও নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু শুরুর দিন থেকেই রাজধানীতে ঢিলেঢালাভাবে লকডাউন পালিত হতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের কন্ডাক্টর আশিক রহমান বলেন, গত দু’দিন আমরা বাস বন্ধ রেখেছি। আজ ভোর থেকে আবার বাস সড়কে নামিয়েছি। আমরা দুই সিটে একজন করে যাত্রী ওঠাচ্ছি। যাত্রীরা মাস্ক না পরলে ওঠাচ্ছি না। নির্দিষ্ট করে দেওয়া অর্ধেক সিটের বেশি যাত্রী হলে নামিয়ে দিচ্ছি।

যাত্রীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তে আমরা আনন্দিত। কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যে অফিস করা খুব কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। কারণ গণপরিবহন না চলায় খরচ ও ভোগান্তি বেড়েছিল। তবে গাড়ির সংখ্যা কম। তারপরও আমরা সন্তুষ্ট।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল থেকে গুলিস্তান এসেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত মো. রানা। তিনি বলেন, আজ রাস্তায় নেমে শান্তি লাগছে। অফিসে যাওয়ার জন্য গাড়ির সংকট নেই। বাসে ওঠার জন্য ঠেলাঠেলি ছিল না। ধীরে-সুস্থেই বাসে উঠতে পেরেছি। যদিও বাস ভাড়া একটু বেশি। তারপরও মনে একটা সন্তুষ্টি রয়েছে যে সময় মতো অফিসে যেতে পারবো।

এর আগে মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বুধবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে বলে জানায়।

ওইদিন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, লকডাউন পরিস্থিতিতে জনসাধারণের যাতায়াতে দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণপরিবহন চলাচলের বিষয়টি শর্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে পুনর্বিবেচনা করে অনুমোদন দিয়েছেন। শুধু সিটি করপোরেশন এলাকায় অর্ধেক আসন খালি রেখে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে।