ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি বাসদের

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) দাবি জানিয়ে বলেছে যে, অবিলম্বে ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ওয়াসা ভবনের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

বক্তারা বলেন, আমরা জানতাম পানির অপর নাম জীবন। ওয়াসা আমাদের এমন পরিস্থিতিতে ফেলেছে তাদের কারণে এ কথার অর্থ এখন দাঁড়িয়েছে, পানির অপর নাম বাণিজ্য। পানি নিয়ে বাণিজ্য চলছে। সারা পৃথিবীতে যত মিঠা পানি আছে এর ৬ শতাংশের একশতাংশ বাংলাদেশের আছে। দিল্লি, পাকিস্তান ও আফ্রিকার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা চলে না। দেশের মানুষ মাথাপিছু পানির প্রাপ্যতা বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি। এদেশের পানি গড়িয়ে গড়িয়ে সমুদ্র চলে যায়। আর সেই দেশে ফোটায় ফোটায় পানির দাম প্রতি বছর বাড়ানো হচ্ছে। ঢাকায় দুই কোটি মানুষের জন্য ওয়াসা প্রতিদিন ২৫০\’শ লিটারপানি উত্তোলন করে। মাথাপিছু ২৫ লিটার পানি পায় ঢাকার মানুষ।

তারা আরও বলেন, বাসা বাড়ির সবকাজেই পানির প্রয়োজন হয়। চলছে করোনা মহামারিকাল, করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে প্রতিনিয়ত ধুতে হয় হাত। এ হাত পানি দিয়েই ধুতে হয়। যার টাকা আছে, সে ব্যক্তির কাছে ২ টাকা, ৫ টাকা কিছু না। যে ব্যক্তি সারাদিনের রোজগার করে ৩০০ টাকা, সেই ব্যক্তির যদি পানির জন্য ১০ টাকা খরচ বাড়াতে হয়, তার জন্য বিষয়টি খুবই কঠিন। কোথাও পানি খেতে গেলে পানির জন্য গ্লাস প্রতি দিতে হয় ২ টাকা।

দেশে ট্যাক্স দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, কয়েকদিন পরেই বাজেট হবে। আমাদের সবার ট্যাক্সের টাকা দিয়েই বাজেট হয়। দেশে কোনো কিছু কিনতে গেলে আমরা ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিই। বাংলাদেশের শ্রমিক, কৃষক সবার ট্যাক্সের টাকায় সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা বেতন হয়। ফলে আমরা পানি খাওয়ার আগেই পানির দাম দিয়ে দিই। জনগণ টেক্স দিলে পানির দাম কেন বাড়ানো হবে? আমাদের দেশে গত ১৩ বছরে ১৪ বার পানির দাম বাড়ানো হয়েছে।

পানির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ১৫ দিনের মধ্যে যদি প্রত্যাহার না করে তাহলে সারাদেশের সব থানায় থানায় বিক্ষোভ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সামনে সমাবেশ করবেন বলেও জানান বক্তারা।

বাসদ নগর আহ্বায়ক বজলুর রশিদ ফিরোজের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ-সমাবেশে বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, বাসদের নগর কমিটির সদস্য জুলফিকার আলী, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল কাদেরী জয় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।