বাধ্য হয়ে সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে: নসরুল হামিদ

পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাধ্য হয়েই সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) ব্যাপক লোকসানের হাত থেকে বাঁচাতেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে বাংলাদেশেও জ্বালানি তেলের দাম কমানো হবে।’

আজ শনিবার (৬ আগস্ট) ঢাকায় সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল।

গতরাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে কেরোসিন, ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেনের দাম অস্বাভাবিকহারে বাড়ানো হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এক লাফে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম একলাফে লিটারে ৩৪ টাকা করে বাড়ানো হয়। নতুন করে ডিজেল ও কেরোসিন এখন ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে ১১৪ টাকা করে।

অন্যদিকে অকটেনে প্রতি লিটারে বাড়ানো হয়েছে ৪৬ টাকা। এখন প্রতি লিটার অকটেন ১৩৫ এবং পেট্রোল ৪৪ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৩০ টাকা লিটার। এই হিসাবে ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ আর অকটেন-পেট্রোলে বেড়েছে ৫১ শতাংশ। জ্বালানি তেলের নতুন দাম শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকেই কার্যকর হয়েছে।

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর থেকে সমালোচনা করছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় বাধ্য হয়ে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

দেশবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ‘যত্রতত্র ডিজেল ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়া উপায় নেই। দেশবাসীকে ধৈর্য ধরতেই হবে। জ্বালানি তেলের নতুন দাম সমাজের সবার কাছে সহনীয় হবে না। অর্থনীতির স্বার্থেই সরকারের কাছে মূল্যবৃদ্ধি ছাড়া উপায় ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বে দামের যে ঊর্ধ্বগতি এর সঙ্গে আমাদের সমন্বয় না থাকলে কিন্তু বিপিসির আরও অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। কারণ, বিপিসি এখন উচ্চমূল্যের ডলার কিনে তাকে তেল আমদানি করতে হচ্ছে। তেলের এই অবস্থাটা বেশিদিন থাকবে না যদি ডলারের দাম কমে আসে। কারণ, বিপিসির সর্বনিম্ন খরচ যদি ৭৯-৮০ ডলারের মধ্যে থাকে তাহলে সমস্যা হয় না। সবশেষ বিপিসি তেল কিনেছে ১৩৫ ডলারের মতো দিয়ে। তার আগে ১৪০ ছিল এমনকি ১৬০-১৭০ ও হয়ে গিয়েছিল। তখন আমরা দাম বৃদ্ধি করিনি কারণ আমরা বাজার পর্যবেক্ষণ করছিলাম, আমরা দেখতে চাচ্ছিলাম আমরা নিজেদের অর্থ কতটুকু খরচ করতে পারি। আমি মনে করি, যদি বিশ্ববাজারে দাম কমে আসে তাহলে আমরাও কমাব আমরা সেই সিদ্ধান্তই নিয়েছি। অ্যাডজাস্টমেন্ট দুই দিকেই থাকা উচিত। বৃদ্ধি সময় থাকা উচিত, কমার সময়ও থাকা উচিত। সবাইকে আমি অনুরোধ করব এত নার্ভাস হওয়ার কিছু নেই।’