বিডিআর হত্যা মামলার আপিলের রায় শিগগিরই

২০০৯ সালে পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতরে হত্যা মামলার রায় শিগগিরই হাইকোর্টে ঘোষণা করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। গত ১৩ এপ্রিল সকল আসামির ডেথ রেফারেন্স ও ফৌজদারি আপিলের ওপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়েছিল। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম জাহিদ সরোয়ার কাজল জানান, ৩৭০ কার্যদিবস শুনানি শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য রাখা হয়েছে। শিগগিরই রায় ঘোষণার বিষয়ে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বে বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ বেঞ্চে বিডিআর হত্যা মামলায় বিচার কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংগঠিত হত্যাকাণ্ডে আনা এ মামলায় দায়ের করা সকল ডেথ রেফারেন্স ও ফৌজদারি আপিলের ওপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।

রাজধানীর পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থিত ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. মো.আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ইতিহাসের কলঙ্কজনক এবং সর্ববৃহৎ এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন, ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে (তিন বছর থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত) কারাদণ্ড, ২৭৮ জনকে খালাস দেয়া হয়। আর ৪ আসামি বিচার চলাকালে মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তারা অব্যাহতি পায়।

রায়ে খালাসপ্রাপ্ত ৬৯ আসামির সাজা চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। অন্যদিকে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা তাদের সাজা বাতিল চেয়ে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। আপিল শুনানির জন্য সুপ্রিমকোর্টের বিশেষ ব্যবস্থায় সর্বমোট ৩৭ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়। এজন্য মোট ১২ লাখ ৯৫ হাজার পৃষ্ঠার ৩৫ কপি ও অতিরিক্ত দুই কপি পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়।

২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনাকর্মকর্তাসহ ৭৪ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। এ ঘটনায় প্রথমে রাজধানীর লালবাগ থানায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে এসব মামলা নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। মামলায় সিআইডি দীর্ঘ তদন্ত শেষে হত্যা মামলায় ২৩ বেসামরিক ব্যক্তিসহ প্রথমে ৮২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে সম্পূরক অভিযোগপত্রে আরো ২৬ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করায় আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৫০।

এছাড়া বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় ৮০৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় সিআইডি। পরে আরো ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে মোট ৮৩৪ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হয়। বিচার চলাকালে বিএডআরের ডিএডি রহিমসহ চার আসামির মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশ সময়:১৬২৫ ঘণ্টা, ২৮ অক্টোবর  ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি