পুলিশকে আইনরক্ষকের ভূমিকায় দেখতে চাই: প্রধানমন্ত্রী

পুলিশ বাহিনীকে আইনের রক্ষকের ভূমিকায় দেখতে চান বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদেরকে আরও পেশাদার ও জনবান্ধব হয়ে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় জনগণের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি জোর দিতে হবে। সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে।’

বৃহস্পতিবার রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষানবিস সহকারী পুলিশ সুপারদের সমাপনী কুচকাওয়াজে যোগদানের পর তাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।

৩৪তম বিসিএসের ১৪১ কর্মকর্তা পুলিশ অফিসার হিসেবে কর্মজীবনে প্রবেশ করছেন। এর মধ্যে ২৬ জন নারী রয়েছেন। নতুন পুলিশ কর্মকর্তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

নতুন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই মুহূর্তে দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।’ স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর বিশেষ অবদানের কথা উল্লেখ করে পূর্বসূরিদের অনুসরণ করতে নতুন পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে রাজারবাগ থেকে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলে পুলিশ বাহিনী। মুক্তিযুদ্ধে সারদা পুলিশ একাডেমিরও বিশেষ ভূমিকা আছে। এখানে ২৪ জন কর্মকর্তা শহীদ হন।’ মুক্তিযুদ্ধে জীবন দেয়া সব পুলিশের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের মাগফেরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

স্বাধীনতার পর পুলিশ বাহিনীকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম দক্ষ করে গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলেছিলেন। আর অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সর্বপ্রথম দরকার আইনশৃঙ্খলার স্থিতিশীলতা। এজন্য আমরা সর্বোতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি পুলিশ বাহিনীকে দক্ষ ও আধুনিক করে গড়ে তুলতে। আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ্য দিয়ে সে উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’ এ সময় তিনি পুলিশের উন্নয়নে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের বিবরণ তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা জানান, পুলিশ যেন আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে পারে এজন্য তাদের সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। তাদের পদ-পদবিও উন্নীত করা হয়েছে। পুলিশের কল্যাণে সরকারের আরও অনেক কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস মোকাবেলায় পুলিশকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশকে আরও উন্নত, পেশাদার ও জনবান্ধব করার প্রক্রিয়া চলছে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক কে এম শহীদুল হক। এছাড়া রাজশাহী অঞ্চলের সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসএফ