করোনা প্রতিরোধে সরকারের কোনো রোডম্যাপ নেই : মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে, করোনা মহামারি আকার ধারণ করলেও এর সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের কোনো রোডম্যাপ গোটা বাংলাদেশে কভিড-১৯ মোকাবিলা করার জন্য যে একটা ম্যাপ, রোড ম্যাপ, একটা পরিকল্পনা, একটা প্রতিরোধ পরিকল্পনা তার সবটাই অনুপস্থিত এখানে।

আজ রবিবার দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উত্তরার বাসা থেকে নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক দলের আয়োজিত ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফখরুল বলেন, আপনারা দেখেছেন, কয়েকদিন আগে চীনা বিশেষজ্ঞরা এসেছিলেন। তারা এসে ঠিক একই কথা বলেছেন যে, বাংলাদেশে সবকিছু এলোমেলো। এখানে কোথায় রোগ আছে সেটাই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ সরকার চিহ্নিত করতে পারছেন না এবং সেটাকে চিহ্নিত করবার জন্য কোনো ব্যবস্থা তাদের নেই।

বাংলাদেশের সরকারের যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তাতে গোটা হেলথ সিস্টেম একেবারে ভেঙে পড়েছে, একেবারেই লেজে গোবরে অবস্থা হয়ে গেছে দাবি করে তিনি বলেন, সরকার স্বাস্থ্যখাতে চরম অবহেলা করার জন্য তাদের উদাসিনতার জন্যে কভিড-১৯ মোকাবিলায় সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয়ার কারণে, ভ্রান্তনীতির কারণে আজকে দেশে সবচেয়ে করুণ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের তরফ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আছেন। তারা একেক সময়ে একেক রকম কথা বলছেন। আমাদের স্থানীয় সরকারের ঢাকা সিটির নর্থের মেয়র গতকাল বলেছেন যে, আর কালবিলম্ব না করে এখন রেড জোনভিত্তিক ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। আপনি দেখুন কতটা অসামঞ্জস্যহীনতা হলে, কতটা নৈরাজ্য সৃষ্টি হলে এ অবস্থা হয়। অনেক আগেই বলা হয়েছে যে দেশে রেড জোন, ইয়েলো জোন, গ্রিন জোন করা হবে। ঢাকা শহরে রেড জোন করে কত অঞ্চল ভাগ করে একদম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে লকডাউন করবেন। একমাত্র পশ্চিম রাজাবাজার ছাড়া কোথাও হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমার মনে হয়, সরকার জানেও না তারা কী করবেন, কী করতে চাচ্ছে?

তিনি আরো বলেন, দুর্ভাগ্যের কথা যে, আমাদের সরকার প্রথম থেকেই এই ভয়াবহ বৈশ্বিক মহামারিকে উপেক্ষা করেছে, অবহেলা করেছে। এটার পেছনে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। পরবর্তিকালে যখন এটা একটা মহামারি আকারে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া শুরু করেছে তখন তারা বাংলাদেশে এটা নিয়ে কিছুটা কথা বলতে শুরু করেছে, কাজ করতে শুরু করেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনার দেখেছেন, মাত্র আড়াই হাজার টাকা করে প্রধানমন্ত্রীর একটা অনুদান ৫০ লক্ষ মানুষকে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটাও পুরোপুরি দলীয়করণ করার ফলে যারা পাওয়া উচিত ছিলো তারা পায়নি। সেটাও মাত্র এককালীন।

বিএনপির পক্ষ থেকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী প্যাকেজ প্রস্তাবনার কথা উল্লেখ করে তাতে সরকার কোনো সাড়া না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ খুব অসহায় হয়ে পড়েছে। তারা কোনো দিক-নির্দেশনা খুঁজে পাচ্ছে না। সরকারের দুর্নীতির কারণে সমস্ত দেশে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়েছে এবং এখন গ্রামে গ্রামে এই করোনাভাইরাসের রোগী দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যেটা- সরকার বলছে যে, এই রোগের জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন। অথচ সেই অক্সিজেন অপ্রভুলতা, অক্সিজেন কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন নেই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক দলের সভাপতি ডা. আরিফুর রহমান মোল্লার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ডা. শফিকুল আলম নাদিমের পরিচালনায় সহ-সভাপতি মশিউজ্জামান পান্নু, মজিবুল্লাহ মুজিব, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম জাকির হোসেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।