বিএনপি নেতাদের বক্তব্য খুন ও খুনিদের পক্ষে : তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মিথ্যা ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বিএনপি করে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাদের অন্য নেতা যে বক্তব্য দিচ্ছেন তা খুনি ও খুনের পক্ষে।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা যখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে তখন তারা আবোল তাবোল বকা শুরু করেছে।

বুধবার দুপুরে সচিবালয় তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে টেলিভিশন নাট্যশিল্পীদের সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘ ও দর্শক শ্রোতা পাঠক ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন।

অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি শহিদুজ্জামান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব নাসিম, সংঘের সাবেক সভাপতি ও দর্শক শ্রোতা পাঠক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শহীদুল আলম সাচ্চুসহ শিল্পী প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন। সভার শুরুতেই মন্ত্রী ১৫ আগস্টে শহীদ বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

সাংবাদিকরা এসময় বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক বক্তব্য ‘ক্ষমতাসীনরা ইতিহাস বিকৃতির অপরাজনীতিতে নেমেছে’ এবং সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য ‘১৫ আগস্টের ঘটনায় জিয়াকে জড়ানোর চক্রান্ত চলছে’ -এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ডের জিয়ার জড়িত থাকাটি স্পষ্ট, ইতিহাস এর সাক্ষী।’

ড. হাছান বলেন, জিয়াউর রহমান যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত সেটি আজকে দিবালোকের মতো স্পষ্ট। আপনারা জানেন, কর্ণেল ফারুক-রশীদ বিবিসি’র সাথে সাক্ষাৎকারে বলেছিল, তারা যখন এই ষড়যন্ত্র শুরু করে, তখন জিয়াউর রহমানের কাছে গিয়েছিল এবং জিয়া তাদেরকে এগিয়ে যেতে বলে। জিয়ার বক্তব্যটা এমনই ছিল- আমি যেহেতু সিনিয়র অফিসার, আমি পর্দার অন্তরালে থাকবো, তোমরা এগিয়ে যাও। আর বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের দন্ডপ্রাপ্ত আসামী ক্যাপ্টেন মাজেদ, যার দন্ড কিছুদিন আগে কার্যকর করা হয়েছে, তিনি তার ফাঁসির আগে যে বক্তব্য রেখেছেন, তাতে জিয়াউর রহমান কিভাবে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত ছিল, তা স্পষ্ট হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ক্যাপটেন মাজেদ যিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দন্ডপ্রাপ্ত আসামি। যার দণ্ড কিছুদিন আগে কার্যকর হয়েছে। তিনি তার ফাঁসির আগে যে বক্তব্য রেখেছেন এতেও স্পষ্ট জিয়াউর রহমান কীভাবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন। এছাড়া কর্নেল বেদের চিঠি জিয়াউর রহমানের কাছে ছিল। তার কপি আমার কাছেও আছে। জিয়া যখন রণাঙ্গনে তখন তার কাছে কর্নেল বেগ চিঠি লিখেছেন, তোমার কাজকর্মে আমরা খুশি এবং তোমার স্ত্রী পুত্রদের নিয়ে কোন চিন্তা করো না। তারা ভালো আছে। মেজর জলিল সম্পর্কে তুমি একটু সতর্ক থেকো। তোমার কাজকর্মের জন্য তুমি পুরষ্কৃত হবে। আমরা পরবর্তীতে দেখতে পেয়েছি সেই কর্ণেল বেগ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর খন্দকার মোসতাক জিয়াউর রহমানকে কেন তিনি তার সেনাপ্রধান বানাবেন? এটিই প্রমাণ করে।

তিনি বলেন, আরো প্রমাণ হচ্ছে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু হত্যাকারিদের তিনি পুরস্কৃত করে বিদেশি মিশনে চাকুরি দিয়েছিল, ’৭৯ সালের পার্লামেন্টে ইনডেমনেটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করেছিল, যাতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার না হয়। এসকল ঘটনা প্রবাহই তো সাক্ষ্য দেয় জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত।

আজকে যখন ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের সাথে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা দিবালোকের মতোই স্পষ্ট হয়ে গেছে, তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আর রিজভী আহমেদসহ বিএনপি আবোল তাবোল বকা শুরু করেছে। তাদের এই বক্তব্য হচ্ছে খুনি এবং খুনের পক্ষে। আমি তাদেরকে অনুরোধ জানাব, তারা যেন খুনি এবং খুনের পক্ষে অবস্থান না নেন।

তথ্যমন্ত্রী এসময় দেশের বিভিন্ন অঙ্গণের শিল্পী এবং কলাকুশলীদের করোনাকালীন সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, কলাকুশলী বলতে যে মাইকম্যান তাকেও চিন্তায় রাখতে হবে, মঞ্চ এবং টেলিভিশনের পর্দার পেছনে যে কাজ করে তার কথাও চিন্তা করতে হবে- এটিই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা। সংগঠনগুলোর কাছ থেকে চাহিদা মোতাবেক তালিকা পেলেই আমরা সহায়তার ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত রয়েছি। শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় কিভাবে টেলিভিশন শিল্পীসহ সকল শিল্পীর কল্যাণ সাধন করা যায়, সে বিষয়ে কাজ চলছে বলেও জানান মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।