বিশৃঙ্খলা তৈরি না করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান ওবায়দুল কাদেরের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন \”রাষ্ট্রপতি সবার সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।\” পাশাপাশি বিশৃঙ্খলা তৈরি না করে সবাইকে নির্বাচনে প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান জানান তিনি।

আজ রোববার দুপুর ১২টায় মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় লিজ দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ থাকলে নির্বাচনও নিরপেক্ষ থাকবে।

বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‌‌‘আদালতের আদেশে ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিদায় নিয়েছে। এটি মীমাংসিত বিষয়। উচ্চ আদালতই তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে মিউজিয়ামে পাঠিয়েছে। নতুন করে এখানে বিতর্কের অবকাশ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করবেন না। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন শেখ হাসিনার সরকারও চায়। বিশৃঙ্খলা তৈরি না করে সবাইকে বলব নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যারা নির্বাচন করতে চান তাদেরকে আমি বলতে চাই, ফখরুল সাহেব আপনার নেত্রী একসময় বলেছিলেন, নিরপেক্ষ পাগল ও শিশু ছাড়া আর কেউই নেই। আপনারা নিরপেক্ষতা বলতে বুঝেন যা, আপনি নিরপেক্ষ তখনই থাকবেন যখন আপনি বিএনপিকে নির্বাচিত হওয়ার পুরোপুরি গ্যারান্টি পাবেন। তাহলে নিরপেক্ষতা থাকবে। এটিই হলো বিএনপির নিরপেক্ষতা। সরকারের এখানে নিরপেক্ষতা কোনো বিষয় নেই। নিরপেক্ষ থাকতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।’

‘সরকারের পক্ষ থেকে বলতে চাই, নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সব নির্বাচন হয়। তাই নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে রাষ্ট্রপতির ওপর আস্থা রাখেন। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হবে। আমাদের গণতন্ত্র কিছুটা হলেও পরিপক্ব হয়েছে। পিছনের তাকাবেন না কারণ ২০০১ সাল এখন আর নেই,’ যোগ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি যারা পদ্মা সেতুর জন্যে পূর্ব-পুরুষের ভিটেমাটি ত্যাগ করেছেন। অনেক পরিবারের কান্না মিশে আছে এ সেতু নির্মাণের সঙ্গে। যারা পদ্মা সেতুর জন্যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের কষ্টের প্রতিদান দিতেই হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে বারবার তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।’

আগামী নভেম্বর থেকে পদ্মা সেতুতে কার্পেটিং শুরু হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি, জুনের আগে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করতে পারব।’

লিজ দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ৮২৩টি প্লটের লিজ দলিলের মধ্যে ২০টি বিতরণ করেন ওবায়দুল কাদের। বাকিগুলো ধারাবাহিকভাবে দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম, রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক মেজর জেনারেল এস এম জাহিদ হোসেন, মুন্সিগঞ্জ ২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেতু বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক।

অনুষ্ঠানে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, পদ্মা নদীর দুই প্রান্তে আধুনিক নাগরিক সুবিধাসহ সাতটি পুনর্বাসন সাইট নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে ৩ হাজার ১১টি আবাসিক প্লটের মধ্যে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৯৬৩টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভূমিহীনদের মধ্যে এর ৮১৪টি প্লট বিনামূল্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।