‘জয় বাংলা’ না বলায় অধ্যক্ষের কক্ষে ছাত্রলীগের তালা

অধ্যক্ষের অপসারণের দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসাবে রোববার সৈয়দপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছে ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

সাত দিনের মধ্যে দাবি আদায় না হলে কলেজ অচল করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সৈয়দপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ আলম।

অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলানোর পর কক্ষের দরজায় হাতে লেখা পোস্টার সেঁটে দেয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। পোস্টারে লেখা আছে, \’জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু না বলায় অধ্যক্ষের কক্ষে তালা, চলছে লড়াই চলবে ছাত্রলীগ লড়বে\’।

আজ রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সৈয়দপুর সরকারি কলৈজ শাখা ছাত্রলীগ সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগ সৈয়দপুর সরকারি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আকাশ সরদার। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ আলম রনি।

সৈয়দপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন গত ৭ মার্চ জাতীয় দিবস পালন না করে অধ্যক্ষ একজন বিএনপি শিক্ষককে অনুষ্ঠান পালনের দায়িত্ব দিয়ে নিজে ছুটিতে ছিলেন। এরপর ওই শিক্ষক অনুষ্ঠানে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু না বলে অনুষ্ঠান শেষ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ছাত্রলীগসহ সাধারণ শিক্ষার্থী। এ নিয়ে তারা কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলসহ অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করে। এ নিয়ে গত ২০ মার্চ সুরাহার জন্য স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা কলেজ অধ্যক্ষের রুমি গেলে সেখানেও কোন সুরাহা পাওয়া যায়নি।

পরের দিন ২১ মার্চ এ নিয়ে সৈয়দপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আতিয়ার রহমান ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে ‘জয় বাঙলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ না বলায় সৈয়দপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সৈয়দপুর উপজেলা, পৌর আওয়ামীলীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। এরপরেও সুরাহা পাওয়া যায়নি।

সবশেষ রোববার (২৪ মার্চ) সকালে ছাত্রলীগ সৈয়দপুর কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আকাশ সরদারের নেতৃত্বে কলেজ অধ্যক্ষের রুমে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সোহাগসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আকাশ সরদার বলেন, জয় বাংলা জাতীয় স্লোগান। সব সরকারি অনুষ্ঠানে এটি বলতেই হবে। অথচ সরকারি কলেজে সরকারি অধ্যক্ষ ও বিএনপিপন্থি শিক্ষরা এটা না করে পুরো বাংলাদেশকে অবজ্ঞা করেছে। আমরা এটা মেনে নিতে পারি না। জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। এর প্রতিবাদ করায় কলেজের একজন শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। ওইদিন আমরাও অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। আমাদের সাথে কলেজের সাধারণ ছাত্ররাও রয়েছেন। কলেজ অধ্যক্ষ তিনি যদি নিঃশর্ত ক্ষমা ও সমাধানে না আসেন ততদিন অধ্যক্ষের রুমে তালা খোলা হবে না।

এ নিয়ে অধ্যক্ষ ড. আতিয়ার রহমানের সাথে মুঠোফোনে কথা হয়। তিনি বলেন, ঢাকায় অবস্থান করছি। তালা ঝুলানোর কথা জেনেছি। ঢাকা থেকে ফিরে অভিভাবক ও সুধীজনদের সামনে পরিস্থিতি ব্যাখা করব।