তৈমুরের কবরের পাশে অঝোরে কাঁদলেন মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির প্রয়াত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমানের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার বিকালে সদর উপজেলার রুহিয়া সালেহীয়া দারুসসুন্নাত ফাজিল মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানে বিএনপির সদ্য প্রয়াত জেলা সভাপতির কবর জিয়ারত করেন মির্জা ফখরুল।

প্রয়াত নেতার স্মৃতিচারণ করে ফখরুল বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান ছিলেন একজন গণমানুষের নেতা। তিনি অসহায়-নিপীড়িত মানুষের অধিকারের জন্য সব সময় সংগ্রাম করেছেন। এ লড়াই করতে গিয়ে তিনি মারা গেলেন। যখন তিনি অসুস্থ হলেন এ সংবাদটি আমি কারাগারে বন্দি অবস্থায় জানতে পারি। তিনি চিকিৎসা নিতে গেলেন ভারতে। এ সময় আমার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন। কিন্তু ফিরে এলেন, ‘তবে লাশ হয়ে’-এ কথা বলতেই অঝোরে কেঁদে ফেলেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব কবর জিয়ারত শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, সারা দেশের মানুষ আজ এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছেন। মানুষের অধিকার বলতে কিছু নেই, গণতন্ত্র বলতে কিছু নেই, মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠা করতে লড়াই-সংগ্রাম করছি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে অবশ্যই এ সংগ্রামে দেশের মানুষ জয়ী হবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।

উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন। বিভিন্ন মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে হয়। তারপরও আপনারা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষের পক্ষে না দাঁড়ালে, তাদের কল্যাণে কাজ না করলে কেউ কোনো দিন ক্ষমা পায় না। এই স্বৈরাচারী সরকারও কোনো দিন ক্ষমা পাবে না।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েস প্রমুখ।

এরপর বিএনপি মহাসচিব ঠাকুরগাঁও পৌর কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত মতবিনিময় ও ইফতার মাহফিলে যোগ দেন। মতবিমিয় সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যে চেতনা, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা যে লড়াই-সংগ্রাম করেছি, তা আজ প্রায় ভূলুণ্ঠিত। প্রায় দুই যুগ ধরে দেশের সংবিধানকে কাটছাঁট করে মানুষের অধিকার, ভোটের অধিকার, ভাত-কাপড়ের অধিকারসহ মুক্ত পরিবেশে কথা বলারও অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ অতীতে যখন ক্ষমতায় ছিল তখনও সব দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। আবারও একই কায়দায় একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে ফ্যাসিস্ট এই সরকার।