ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, প্রতিবাদে এক পক্ষের বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ

শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আজ মঙ্গলবার সকালে ৩৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি বাতিলের দাবিতে ছাত্রদলের একটি পক্ষ দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে শরীয়তপুর-মাদারীপুর সড়ক শহরের কোর্ট এলাকা অবরোধ করে রাখে।

ছাত্রদল সূত্র জানায়, ২০২১ সালে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর চার বছর জেলায় ছাত্রদলের কোনো ধরনের কমিটি ছিল না। মঙ্গলবার সকালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন স্বাক্ষরিত জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।

৩৫ সদস্যের ওই আহ্বায়ক কমিটিতে ১৬ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও ১৭ জনকে সদস্য করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জাকিরকে। তিনি শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী। সদস্যসচিব করা হয়েছে শরীয়তপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল তালুকদারকে।

নতুন আহ্বায়ক কমিটির তালিকা মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রদলের একটি পক্ষ বিক্ষোভ শুরু করে। তারা দুপুরে শরীয়তপুর সরকারি কলেজে ও মাদারীপুর-শরীয়তপুর সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় তাঁদের হাতে লাঠি, ঝাড়ু ও জুতা দেখা যায়। বিক্ষোভকারীরা কমিটি বাতিলের দাবি জানান। মিছিল শেষে কোর্ট এলাকায় সড়কের ওপর বসে অবরোধ করে রাখেন। পরে সদরের পালং মডেল থানা–পুলিশ সড়ক থেকে তাঁদের সরিয়ে দেয়। এ সময় ২০ মিনিট সড়কটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

ঢাকার একটি কলেজের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী পান্থ তালুকদারকে নতুন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। তিনিও কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা দীর্ঘদিন নানা নির্যাতন, মামলা-হামলা উপেক্ষা করে দলটি করেছি, তাদের মতামত না নিয়ে এভাবে কমিটি ঘোষণা দেওয়া উচিত হয়নি। আমরা চাই তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে ছাত্রদের নিয়ে কমিটি করা হোক।’

আহ্বায়ক কমিটির বেশ কয়েকজন বিক্ষোভে অংশ নিয়ে কমিটি বাতিলের দাবি জানান। তাঁদের একজন শরীয়তপুর সরকারি কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি বাবু মাদবর গণমাধ্যমকে বলেন, যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে অধিকাংশেরই এখন আর ছাত্রত্ব নেই। তাঁরা কর্মজীবী ও বিবাহিত। যাঁকে আহ্বায়ক করা হয়েছে, তাঁর পরিবারের সব সদস্য আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত। তিনিও দলটির সঙ্গে মিলে বিগত দিনগুলো কাটিয়েছেন।

আহ্বায়ক এইচ এম জাকির গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সংগঠনটির অচলাবস্থা কাটানোর জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠন ও জেলা কমিটির সম্মেলন করে নতুন কমিটি গঠন করার জন্য আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন পর কমিটি ঘোষণা দেওয়ায় অনেকে কাঙ্ক্ষিত পদে যেতে পারেননি। তাঁরাই ক্ষুব্ধ ও অভিমান করে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব ঠিক হয়ে যাবে।’

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ বিক্ষোভ করার পর সড়কের ওপর বসে পড়েছিল। তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।

Scroll to Top