নতুন রাজনৈতিক দল ‘বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ

‘বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি’ নামে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের ঘটেছে। ‘সবার উপরে দেশ’ স্লোগান নিয়ে গতকাল শুক্রবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে দলটি।

বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি (বিআরপি) নামের এই দলের প্রধান উপদেষ্টা সেলিম প্রধান, যিনি সমাজ সেবা এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণে পূর্বে ভূমিকা রেখেছেন।

দলটির সভাপতি হিসেবে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মো. মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মেজর (অব.) মো. রাজিবুল হাসানের নাম ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া সাঈদ আলী সিকদারকে দলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি করা হয়।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান, সাজ্জাদ হোসেন ইউনুস ও মো. আহসানুল্লাহ। সাংগঠনিক সম্পাদক মেজর (অব.) রাকিবুল হাসান ও মঞ্জুর হোসেন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ আবুল হাসানাত, মো. জাহিদুল ইসলাম, মুশফিকুর রহিম রনি, কামরুল হাসান, আইনবিষয়ক সম্পাদক অলিদ আহমেদ, নারী ও শিশুবিষয়ক সম্পাদক আনিকা তাসনীম খান, সহসম্পাদক মৌসুমী আক্তার সুমি, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শাহাদাত হোসাইন, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক সম্পাদক মেজর (অব.) শাহেদুল ইসলাম, সহসম্পাদক (সহপরিচালক) মো. জহিরুল হক, দুর্যোগ ও ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত, আপ্যায়নবিষয়ক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, সহসম্পাদক মোছা. শারমিন আক্তার মুক্তা, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মো. রাহুল আমিন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সহসম্পাদক সৌরভ চন্দ্র মজুমদার।

নবগঠিত দলের ২৮ সদস্যের আংশিক কমিটিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা, কৃষিবিদ, শিক্ষক এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। তারা সবাই একমত যে, ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার এবং জনগণের আস্থা অর্জনই হবে এই দলের মূল লক্ষ্য।

এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মো. মেহেদী হাসান জানান, সব নাগরিকের সমান অধিকার, ইনসাফভিত্তিক সমাজব্যবস্থা, কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্থায়ী সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলো ‘জুলাই বিপ্লবের মূল চেতনা’ থেকে সরে এসেছে। এতে পলাতক ফ্যাসিস্টদের লাল পাসপোর্ট নিয়ে দেশ ত্যাগ, শহীদদের পরিবারের প্রতি অবহেলা, আহতদের পুনর্বাসনের ঘাটতি এবং চিহ্নিত দোষীদের রাজনৈতিক পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ক্যাপ্টেন (অব.) মো. শফিকুর ইসলাম জানান, নতুন দলের উদ্দেশ্য হচ্ছে, এটি ক্ষমতার লোভ নয়, বরং সুশাসন, ন্যায়বিচার ও জনকল্যাণ প্রতিষ্ঠার জন্যই কাজ করবে। রাজনীতিকে ব্যবসা নয়, বরং পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে তুলে ধরতে চা জানিয়ে বলেন, রাজনীতি মানে অনেকের কাছে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, অপকর্মে জড়িত হওয়ার অন্যতম মাধ্যম। তার দল সেসব থেকে ভিন্ন কিছু করতে চায়। এখানে কোনো অসৎ লোকের স্থান হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন বিআরপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ইউনূস।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক ’৪৭, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দেশপ্রেমিক নাগরিক আজ বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি (বিআরপি) নামের এক নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দিচ্ছি।

‘এই দল গঠনের পেছনে রয়েছে সেই বাঁধভাঙা জুলাই আন্দোলনের অনুপ্রেরণা, যেখানে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে একটি সুশাসনভিত্তিক বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রায় দুই হাজার বীর শাহাদাত বরণ করেছেন ও ৩০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন।’

এতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি (বিআরপি) হবে একটি জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল। পাশাপাশি ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা, বৈষম্যহীন ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠনের মূলনীতি নিয়ে সব রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও মর্যাদাভিত্তিক সম্পর্ক দলটির পররাষ্ট্রনীতি হবে।’

Scroll to Top