হারারে টেস্ট: রোমাঞ্চ জমা রইল শেষ দিনের জন্য

হারারের পিচ বোলারদের জন্য কি হতাশা বয়ে আনছে? এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে উইকেট যথেষ্টই ব্যাটিংবান্ধব। পঞ্চম ও শেষ দিনে জিম্বাবুয়ের জয়ের জন্য প্রয়োজন ৩৩৭ রান, বাংলাদেশের দরকার ৭ উইকেট। ফল কী হবে?

শেষ দিনের জন্যই যেন সব রোমাঞ্চ জমা রাখল হারারে টেস্ট। তবে বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির খবর, প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের হাল ধরা তাকুজওয়ানাসে কাইতানো আর ব্রেন্ডন টেলর দুজনই সাজঘরে ফিরে গেছেন।

নিজের ক্যারিয়ারের অভিষেক ইনিংসে ৮৭ করা কাইতানো ফিরেছেন এবার ৭ রানেই। টেলর আরও একবার রান পেয়েছেন। কিন্তু প্রথম ইনিংসে ৮১ করা জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক এবার ফিরেছেন আরও বড় আক্ষেপ নিয়ে। মাত্র ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি।

লক্ষ্য ৪৭৭ রানের। জিম্বাবুয়েকে এই টেস্টটা জিততে হলে বিশ্বরেকর্ডই গড়তে হবে। টেস্ট ইতিহাসেই ৪১৮ রানের বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেন্ট জোনসে এই বিশ্বরেকর্ড গড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

জিম্বাবুয়েকে করতে হবে তার চেয়েও ৫৯ রান বেশি। তবে কাগজে-কলমে সম্ভাবনা কিন্তু এখনও রয়ে গেছে। ৩ উইকেটে ১৪০ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। একদিনে আরও ৩৩৭ রান তোলা অসম্ভব নয় নিশ্চয়ই। হাতে তো এখনও ৭ উইকেট আছে।

কিন্তু বাংলাদেশি বোলাররাই কি বসে থাকবেন? দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে ব্রেন্ডন টেলর ওমন তেড়েফুড়ে না খেললে জিম্বাবুয়ে কিন্তু শেষদিন পর্যন্ত লড়াই জমিয়ে রাখার রসদটা পেতো না।

জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক টি-টোয়েন্টি স্টাইলে ব্যাটিং করে ৭৩ বলে ৯২ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলেন। ১৬ বাউন্ডারিতে গড়া যে ইনিংসের ইতি টেনেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। নিজে বোলিং করে নিজেই ফিরতি ক্যাচ নিয়েছেন।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নামা জিম্বাবুয়ের সামনে দুই প্রান্ত থেকে স্পিন আক্রমণ দিয়ে শুরু করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। তবে সাকিব আল হাসান আর মিরাজের করা প্রথম ৫ ওভার ভালোভাবেই কাটিয়ে দেন স্বাগতিক দুই ওপেনার।

ষষ্ঠ ওভারে তাসকিন আহমেদকে আক্রমণে নিয়ে আসেন মুমিনুল। আর নিজের প্রথম ওভারেই অধিনায়কের মুখে হাসি ফোটান এই পেসার। তাসকিনের দারুণ এক ডেলিভারি খোঁচা দিতে গিয়ে বদলি ফিল্ডার ইয়াসির আলি রাব্বির ক্যাচ হন মিলটন সাম্বা (১১)।

উইকেটে এসে তার পরের বলটিই বাউন্ডারি হাঁকান টেলর। জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক যেন আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন, এবার আর দেখেশুনে নয়, চালিয়ে খেলে যাবেন।

মারকুটে ব্যাটিংয়ে ৩৪ বলেই ফিফটি তুলে নেন টেলর। সেখানেই থামেননি, সুযোগ পেলেই বলকে সীমানা ছাড়া করছিলেন একের পর এক। শেষ পর্যন্ত তার এই কাউন্টার অ্যাটাক থেমেছে মিরাজের বুদ্ধিমত্তায়। অফসাইডের বাইরে মিরাজের ডেলিভারি মারতে গিয়েও পরে যেন শেষ মুহূর্তে মন বদলে ফেলেন, আর সেই বল আলতো করে ব্যাটে লেগে ফিরতি ক্যাচ হয় মিরাজেরই।

দিনের শেষ সময়ে এসে আরও এক উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। এবার সাকিবের গুড লেহ্ন বল মিস করে প্যাডে লেগে যায় \’দ্য ওয়াল\’ হয়ে দাঁড়াতে চাওয়া কাইতানোর। এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। ৭ রান করতে তিনি ক্রিজে ছিলেন ১৪৬ মিনিট, বল খেলেন ১০২টি।

এর আগে সাদমান ইসলাম আর নাজমুল হোসেন শান্তর জোড়া সেঞ্চুরিতে ১ উইকেটে ২৮৪ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। সাদমান ১১৫ আর শান্ত ১১৭ রানে অপরাজিত থাকেন।