সিলেটে ভয়াবহ জ্বালানি তেল সংকট

উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশের প্রধান শহর সিলেটে বেড়েই চলছে জ্বালানি তেলের সংকট। চট্টগ্রাম থেকে নিয়মিত ওয়াগন না আসায় সিলেটে তেলের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এমতাবস্থায় সংকট নিরসনে প্রশাসনকে এক সপ্তাহের সময় বেঁধে দিয়েছেন সিলেটের জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা। এই সময়ের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে আগামী রবিবার থেকে সিলেট বিভাগের সব পেট্রোল পাম্পে লাগাতার ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা জানান, সিলেট বিভাগে প্রতিদিন ৫ লাখ লিটার ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন ও কেরোসিনের চাহিদা রয়েছে। আগে সিলেটের গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে উত্তোলিত কনডেনসেট (উপজাত) এখানকার সরকারি শোধনাগারে পরিশোধন করে পেট্রোল ও অকটেন উৎপাদন করে সরবরাহ করা হতো। কিন্তু গেল প্রায় ৫ মাস ধরে বিএসটিআইর নির্ধারিত মানসম্পন্ন জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না এই অজুহাতে সিলেটের সব রাষ্ট্রীয় শোধনাগার বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এরপর সিলেট থেকে কনডেনসেট পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শোধনাগারে। তাই এখন জ্বালানি তেলের জন্য সিলেটের ব্যবসায়ীদের চট্টগ্রাম নির্ভর হয়ে থাকতে হচ্ছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমদ চৌধুরী জানান, মানসম্পন্ন জ¦ালানি তেল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না এমন অজুহাতে সিলেটের রাষ্ট্রীয় সব শোধনাগার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ বেসরকারি যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে তেল সরবরাহ করা হচ্ছে তার মান আরও নিম্নমানের।

জুবায়ের আহমদ জানান, জ্বালানি তেলের সংকট নিরসনের লক্ষ্যে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল গতকাল জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করেছে। সংকট নিরসনে জেলা প্রশাসনকে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে জ্বালানি তেলের সংকট নিরসন না হলে আগামী রবিবার থেকে সিলেট বিভাগের সব পেট্রোল পাম্পে লাগাতার ধর্মঘট শুরু হবে। জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা জানান, সিলেট বিভাগে প্রতিদিন ডিজেল, পেট্রোল, অকেটন ও কেরোসিনের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৫ লাখ লিটার।

কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে প্রতি সপ্তাহে সরবরাহ করা হচ্ছে ৫ থেকে ১০ লাখ লিটার। রেলের ওয়াগন ও ইঞ্জিন সংকটের কারণে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় সিলেটে জ¦ালানি তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা আশুগঞ্জ, ভৈরব ও শ্রীমঙ্গল ডিপো থেকে জ্বালানি তেল এনে সিলেটের চাহিদা পূরণ করতে হচ্ছে।