সময়ের প্রয়োজনে কম্পিউটিং এর ক্ষেত্র যেমন বিকশিত হয়, তেমনি পরিস্থিতি অনুযায়ী পারফরম্যান্সের সংজ্ঞাও পাল্টাতে থাকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবশ্য এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। মানুষ বুঝতে পেরেছে, সেরা কম্পিউটিং পারফরম্যান্স বলতে আসলে কী বোঝায়। আগে কম্পিউটিং সক্ষমতা বলতে শুধু গতিকেই বোঝানো হতো। এর মধ্যে এখন স্থিতিশীলতা (স্ট্যাবিলিটি) ও মসৃণতার (স্মুদনেস) বিষয়টিও যুক্ত হয়েছে।
একজন স্মার্টফোন ইউজার তখনই সাবলীলতা ও সক্ষমতার প্রকৃত অনুভূতি উপভোগ করতে পারেন, যখন সকল পরিস্থিতিতে অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারে একটি সামঞ্জস্যতা থাকে। আর এ নীতিমালাই অনুসরণ করে থাকে শীর্ষস্থানীয় গ্লোবাল স্মার্টফোন প্রযুক্তি কোম্পানি ‘অপো’। প্রতিষ্ঠানটি কালারওএস এর মাধ্যমে গত এক দশক ধরে স্মার্টফোন প্রযুক্তির উন্নতিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আসছে। গত দশ বছরে, কালারওএস এর প্রতি ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুত প্রতিক্রিয়া, স্থায়িত্ব ও সিল্কি স্মুদনেসের মধ্যে নিখুঁত ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য কাজ করছে অপো।
দৃশ্যমান’ ও ‘অদৃশ্য’ স্মুদনেস
সেরা স্মুদ ইউজার এক্সপেরিয়েন্স প্রদানের ক্ষেত্রে অপো’র প্রথম সাফল্যের মধ্যে একটি হলো ইউআই ফার্স্ট, যেটি ২০২০ সালের শুরুর দিকে চালু করা হয়। ইউআই ফার্স্ট ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে বাড়তি সিস্টেম রিসোর্স ব্যবহার করা থেকে বাধা দেয়। পাশাপাশি চালু থাকা অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে সামগ্রিক পারফরম্যান্স কমে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। ফলে, লেটেন্সিতে উল্লেখযোগ্য হ্রাস ঘটে এবং আমরা যাকে ‘ভিজিবল স্মুদনেস’ বা ‘দৃশ্যমান মসৃণতা’ বলি, তারও উন্নতি ঘটে।
তবে, সক্রিয় অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে সাপোর্ট করতে কম্পিউটিং রিসোর্সের ওপর নির্দেশনা থাকায়, ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকা অ্যাপ্লিকেশনগুলো রিসোর্সের অভাবে কার্যত মৃতপ্রায় হয়ে পড়ে। ফলে, কোনো কারণে ওই অ্যাপগুলোতে সুইচ করতে গেলে সময় বেশি লাগে। এদিকে, ৫জি- এর ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে হাই-ডেটা মিডিয়ার ব্যবহার বেড়েছে। যার মাধ্যমে আমরা এখন তথাকথিত ‘রিচ মিডিয়া’ যুগে প্রবেশ করেছি। এটি সিস্টেমে বাড়তি প্রক্রিয়াকরণের চাপ তৈরি করছে। এই ‘অদৃশ্য’ স্মুদনেসের সমস্যা সমাধানের জন্য, অপো আরও ভালো তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, স্থিতিশীল ব্যাটারি লাইফ এবং আরও নিরবচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য কালারওএস- কে অপ্টিমাইজ করা শুরু করেছে।
আরও মানবিক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ
অপোর প্রকৌশলীরা স্মার্টফোনের স্মুদনেসকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তারা শীর্ষ পারফরম্যান্সের জন্য টেক অথোরিটির কাছ থেকে কালারওএস স্বীকৃতিও অর্জন করেছে।
অপো’র সফটওয়্যার টেকনোলজি প্ল্যানিং ডিরেক্টর হ্যানশেং হং বলেন, “একজন সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে, আমার ইচ্ছে ছিল যতটা সম্ভব দ্রুত সবকিছু করা। কম সময়ের মধ্যে সেরা ফলাফল দিতে চাপ প্রয়োগ করার অভ্যাস হওয়া আমাদের জন্য সহজ।”
অপো কিভাবে ওএস এর ডিজাইনে হিউম্যান ফ্যাক্টরস অ্যানালাইসিস (এইচএফএ) চালু করেছে, এটা তার একটি উদাহরণ। এটি এমন একটি ক্ষেত্র, যা মেশিন ও পরিবেশের সঙ্গে মানুষের মিথস্ক্রিয়া বুঝতে সক্ষম। ফলে মেশিন বা সিস্টেমগুলো মানুষের শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে আরও খাপ খাওয়াতে পারে। হিউম্যান ফ্যাক্টর অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে, হং শিখেছেন যে, মানুষের চোখ শুধু ১০০-১৫০ মিলি সেকেন্ড বা তার বেশি সময়ের ব্যবধান হলে পরিবর্তন শনাক্ত করতে পারে। যদি পরিবর্তনগুলো ১০০ মিলি সেকেন্ডের কম সময়ে ঘটে, তবে বেশিরভাগ মানুষই এ পার্থক্য ধরতে পারে না। এর মানে হলো, হার্ডওয়্যারটি এটা করতে পারলেও, সিস্টেমের প্রতিক্রিয়ার সময়কে ৫০ মিলি সেকেন্ডের কম করার প্রয়োজন হয় না।