সাদা বাড়ির লড়াইঃ আমেরিকায় ভিন্ন ইতিহাসের আশঙ্কা!

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র আমেরিকায় আজ মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৫৯তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হবে দেশটির ৪৬তম প্রেসিডেন্ট।

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই দেশটিতে শুরু হতে যাচ্ছে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আজ গোটা দুনিয়া তাকিয়ে আছে আমেরিকার দিকে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবারও নির্বাচনে প্রার্থী। তার প্রতীক ‘হাতি’। নির্বাচনে এবার ট্রাম্পের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। তার প্রতীক ‘গাধা’। বিভিন্ন সমীক্ষায় এবার ট্রাম্পের থেকে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন।

কিন্তু কে হতে চলেছেন আমেরিকার ৪৬তম রাষ্ট্রপতি, এ নিয়ে শুধু আমেরিকায়ই নয়, গোটা বিশ্বেই চলছে তুমুল জল্পনা। নানা ধরনের বক্তব্য ও মন্তব্যের মাধ্যমে বছরজুড়েই সংবাদের শিরোনামে থাকা সেই ডোনাল্ড ট্রাম্পই কি আবার হাল ধরছেন আমেরিকার, নাকি ক্ষমতার মসনদ ছিনিয়ে নেবেন জো বাইডেন? এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য আর বেশি অপেক্ষা করতে হবে না বিশ্ববাসীকে।

এদিকে, রবিবার (১ নভেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সশরীরে আগাম ভোট শেষ হয়েছে। এবার আগাম ভোট দিয়েছেন প্রায় ১০ কোটি মানুষ। ধারণা করা হচ্ছে, আজ মূল ভোটের দিন ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন কমপক্ষে আরও ছয় কোটি ভোটার।

আমেরিকার ইতিহাসে আর কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি। মূল ভোটের একদিন আগেই অধিকাংশ ভোটার তাদের রায় দিয়ে দিয়েছেন। এসব আগাম ভোট, ডাকযোগে ভোট নিয়ে সমস্যা শুরু হতে পারে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই আগাম ভোট নিয়ে আমেরিকায় ভিন্ন কোনও ইতিহাসও দেখা দিতে পারে। দেশটির ইতিহাসে কোনও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে এর আগে এমন সংশয় আর উৎকণ্ঠা দেখা যায়নি।

সব জরিপ বলছে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন এগিয়ে আছেন। আবার সব আলোচনায় একই সংশয়, ট্রাম্প কী আবার কোনও ভেলকি দেখাবেন?

তবে ট্রাম্পের বাঁচা–মরার লড়াই হবে দেশটির উত্তর–পূর্বের রাজ্য পেনসিলভানিয়ায়। এই রাজ্যে ট্রাম্প বিজয়ী না হলে তার পুনর্নির্বাচিত হওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। বিষয়টা বোঝেন ও। তাই এই রাজ্যে চোখ তারও। তিনি ভোটের আগে শেষ দিন এই রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এদিকে, নির্বাচনের ফলাফল মঙ্গলবার রাতে নাও পাওয়া যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কেননা, অন্যান্য বছরের চেয়ে দশগুণ বেশি ভোট এবার ডাকযোগে পড়েছে। গণনা সম্পন্ন হতে কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহও লাগতে পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে এসব ভোটের গণনা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। আর এ বিরোধ সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্তও গড়াতে পারে।

উত্তেজনা দেখা দিতে পারে ডাকযোগে পাওয়া ভোট ও আগাম ভোটের গণনা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। আমেরিকার ইতিহাসে কখনও কোনও নির্বাচন নিয়ে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তিপূর্ণভাবে ফল মেনে নেওয়ার আগাম কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি। ফলাফল সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ানোর সম্ভাবনা নিয়ে জোর কথাবার্তা চলছে।

এমন অবস্থায় ট্রাম্পের সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ, সংঘাতের তীব্র আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন আশঙ্কাও আমেরিকার নির্বাচন নিয়ে আগে কখনও করা হয়নি।

এদিকে, নির্বাচনী ফলাফল সুপ্রিম কোর্টে পর্যন্ত গড়ালে বর্তমান বাস্তবতায় ট্রাম্প সুবিধা পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীল প্রাধান্যের কারণে এমন সন্দেহ আরও প্রবল হয়ে উঠেছে।