‘নবম ধাপে আমাকে ঠোঁট কাটতে বলা হয়’

বিশ্বজুড়ে চলছে ‘ব্লু হোয়েল’ আতঙ্ক। ইতিমধ্যে ‘ব্লু হোয়েল’ খেলে অনেকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে কয়েকজন কিশোর-কিশোরীর মৃত্যুর জন্য ব্লু হোয়েলকে দায়ী করা হচ্ছে।

গেমটির শেষ পরিণতি হিসেবে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে অনেকেই। আবার অনেকেই প্রচণ্ড মনোবলের সঙ্গে এই মরণফাঁদ জয় করেছেন বলে জানিয়েছেন। বেঁচে ফেরা এমনই একজন কলকাতার তরুণ বিজয় (ছদ্মনাম)।

প্রকৌশলবিদ্যার তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বিজয় সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানান, চ্যাটিং অ্যাপ্লিকেশন ‘হোয়াটসঅ্যাপ’-এ এই ব্লু হোয়েল গেমটির কথা প্রথম শোনেন তিনি। সেখানে অনলাইনে এই গেম খেলতে নিষেধ করা হয়েছিল। তবে সেসব কথায় কান না দিয়ে চলতি বছরের আগস্টে গেমটি খেলতে শুরু করেন তিনি। গেমটির অষ্টম ধাপে তাঁকে হাত কেটে নীল তিমি আঁকতে বলা হয়। কথামতো হাত কাটেন তিনি। পরের ধাপে কাটতে বলা হয় ঠোঁট। তখনই ভয়ে পিছিয়ে যান বিজয়।

বিজয় তাঁর হাতে আঁকা নীল তিমির ছবিটি বের করে দেখিয়ে এনডিটিভিকে বলেন, ‘যিনিই এই গেম খেলে থাকেন না কেন, আমি বলব এখনই বন্ধ করুন। এটা কোনো খেলা নয়। তারা আপনাকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ দেবে, আর এমন পর্যায়ে নিয়ে যাবে যে আপনি আর ফিরতে পারবেন না। তারা আপনাকে আত্মহত্যার দিকে নিয়ে যাবে। আপনি বাধ্য হবেন…।’

কলকাতার ওই শিক্ষার্থীকে ব্লু হোয়েল ‘ফাঁদ’ থেকে ফিরিয়ে আনেন ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডির এক কর্মকর্তা। তিনি জানান, বিজয়ের হাতে নীল তিমির ছবি দেখে তাঁর সহপাঠী বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে জানান। তিনি এ তথ্য দেন সিআইডিকে। এর পরই মাঠে নামেন ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

সিআইডি কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘প্রথমে বলিনি আমি একজন পুলিশ কর্মকর্তা। আমি তাঁর কাছে নিজেকে কাউন্সেলর (পরামর্শক) বলে পরিচয় দিই। তবে সে খুব ভয় পাচ্ছিল। সে ধারণা করছিল, খেলা বন্ধ করলে তাঁকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হবে।’

গেমটি থেকে ফেরানোর জন্য ওই সিআইডি কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানান ওই তরুণ। তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধু ও সিআইডি কর্মকর্তার হস্তক্ষেপের জন্য আমি খুবই কৃতজ্ঞ।’

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, ১৭ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসএফ