বিধানসভা নির্বাচন: মুসলিম ভোটেই বাজিমাত মমতার!

বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপিকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল ১৪৮টি আসনের। তবে তৃণমূল ২১০টিরও বেশি আসন পেয়েছে। নির্বাচনে মুসলিম ভোটই ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপুল বিজয়ের অন্যতম কারণ।

এবারের নির্বাচনে বিধানসভার আসনগুলোর মধ্যে ৬৩টি আসনে প্রাধান্য ছিল মুসলিম ভোটের। এর মধ্যে ৬১টি আসনে নির্বাচন হয়েছে। প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে দুটি আসনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এই ৬১টি আসনের মধ্যে মমতার তৃণমূল পেয়েছে ৫৮টি আসন, বিজেপি দুটি, সংযুক্ত মোর্চা একটি। মুসলিম মিরর পত্রিকায় এ পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে।

মুসলিম ভোটারদের প্রাধান্যপূর্ণ আসনগুলোর বেশির ভাগই চারটি জেলায়। এগুলো হলো মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগানা। মুর্শিদাবাদে রয়েছে ১৬টি আসন। বাকি তিনটি জেলার প্রত্যেকটিতে আছে ৯টি করে আসন।

বিজেপি মুসলিম প্রাধান্যপূর্ণ আসনগুলোর মধ্যে মাত্র দুটিতে জয়ী হয়েছে। এ দুটির একটি হলো উত্তর দিনাজপুর, অপরটি হলো মুর্শিদাবাদে। আর সংযুক্ত মোর্চার সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট জিতেছে একটি আসনে।

রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে ৭৪টিতে সংখ্যালঘু ভোটার ৪০ শতাংশ বা তার বেশি। ওই সব কেন্দ্রের বেশির ভাগেই বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল। জোড়াফুল শিবির ওই ৭৪টি আসনের মধ্যে ৬৯টি দখল করেছে। বিজেপি পেয়েছে মাত্র দুটি আসন। ভাঙড় আসনটি পেয়েছে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)।

এদিকে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর পশ্চিমবঙ্গ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। গত দুই দিনে সেখানে সংঘর্ষে ১১ জন রাজনৈতিক কর্মী নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ঘটেছে অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনাও।

আজ মঙ্গলবার (৪ মে) পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে পশ্চিমবঙ্গে আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রতাপ নাড্ডা। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখর রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব, ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে ডেকে রাজভবনে বৈঠক করেছেন। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনতার কাছে আবেদন জানিয়েছেন, সবাইকে সংযত থাকার জন্য।

বিজেপি জানিয়েছে, তাদের ছয়জন কর্মী তৃণমূলের আক্রমণে মারা গেছে। অন্যদিকে তৃণমূলের দাবি, তাদের চারজন কর্মী মারা গেছেন বিজেপির আক্রমণে। উত্তর চব্বিশ পরগনার দেগঙ্গায় নিহত হয়েছেন নওশাদ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) এক কর্মী।