পুতিনের শর্তের কাছে ইউরোপের ১০ দেশের অসহায় আত্মসমর্পণ

মস্কোর কাছ থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শর্ত মেনেই রুবলে গ্যাস কিনছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অন্তর্ভুক্ত অন্তত ১০ দেশ। বিষয়টি জানিয়েছেন ইইউ সদস্য রাষ্ট্র হাঙ্গেরির এক শীর্ষ কর্মকর্তা।

রুবলে গ্যাস কিনতে ইতোমধ্যেই রাশিয়ায় অ্যাকাউন্ট খুলেছে ইউরোপীয় জ্বালানি কোম্পানিগুলো। এর আগে মস্কোর বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার জবাবে রুবলে গ্যাস বিক্রির পাল্টা শর্ত আরোপ করেছিলেন পুতিন।

ইউক্রেনে সেনা পাঠানোয় মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাসহ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউসহ পশ্চিমা দেশগুলো। জবাবে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে পাল্টা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেন পুতিন। এর মধ্যে অন্যতম হলো রাশিয়া থেকে গ্যাস কিনতে রুবলে মূল্য পরিশোধের শর্ত।

পুতিনের এই শর্তকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে রুবলে গ্যাস কেনার শর্ত না মানার ঘোষণা দেয় ইউরোপীয় দেশগুলো। কিন্তু গোপনে পুতিনের দাবি মেনেই রাশিয়া থেকে রুবলে গ্যাস কিনছে ইইউভুক্ত অন্তত ১০টি দেশ। হাটে এই হাড়ি ভেঙেছেন খোদ ইইউভুক্ত রাষ্ট্র হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের চিফ অব স্টাফ গারগেলি গালিয়াস। শুধু তাই নয়, রুবলের প্রয়োজন মেটাতে ইতোমধ্যেই রাশিয়ার গ্যাজপ্রম ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলেছে এসব দেশের জ্বালানি কোম্পানিগুলো।

গারগেলি গালিয়াস আরও জানান, ইউরোপীয় এই দেশগুলোর নেতারা নিজেদের মুখ রক্ষা করতে এখনো রুবলে গ্যাস আমদানির বিষয়টি স্বীকার করছেন না। হাঙ্গেরিও রাশিয়ার গ্যাজপ্রম ব্যাংকে একটি ইউরো অ্যাকাউন্ট খুলেছে এবং অন্য ৯টি দেশও একইভাবে রাশিয়ার গ্যাসের মূল্য পরিশোধ করছে বলে জানান তিনি। তবে দেশগুলোর নাম প্রকাশ করেননি প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের চিফ অব স্টাফ।

এর আগে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের এক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাতে একই খবর প্রকাশ করেছিল পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপের চার গ্যাস ক্রেতা এরইমধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের শর্ত মোতাবেক রুবলে গ্যাস কিনছে।

তবে রুবলে গ্যাস কেনার শর্তে রাজি না হওয়ায় পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। নতুন কিস্তি না দেওয়া পর্যন্ত মে মাসের দ্বিতীয় ভাগের আগে আর দেশ দুটিকে গ্যাস সরবরাহের কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও জানায় মস্কো।

ইউক্রেন সামরিক অভিযান শুরুর পর গত দুই মাসে ইউরোপের কাছে জ্বালানি বিক্রি বাবদ অন্তত ৬ হাজার ২০০ কোটি ইউরোর সমান অর্থ আদায় করেছে রাশিয়া।

সংবাদ সূত্রঃ বিবিসি