তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যু ৫০ হাজার ছাড়াবে: জাতিসংঘ

তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের ৬ দিনের মাথায় নিহতের সংখ্যা ২৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তবে এই সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

স্থানীয় সময় শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মূল কেন্দ্রস্থল সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামনমারাস শহরে পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন জাতিসংঘ ত্রাণ প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস।

স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, আমি মনে করি সঠিক হিসেব দেওয়া কঠিন। তবে আমি নিশ্চিত এটি দ্বিগুণ কিংবা তারচেয়ে বেশি হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা প্রকৃতপক্ষে মৃতের সংখ্যা গণনা শুরু করিনি।

এদিকে তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতে জানিয়েছেন, শুধু তুরস্কেই নিহত হয়েছে ২৪ হাজার ৬০০ জন। দেশটির ১০টি প্রদেশের ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ভয়াবহ দুর্যোগে। তিনি আরও জানান, ৩২ হাজার ৭১টি টিম উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।

এদিকে, সিরিয়ান অবজারভেটরি হিউম্যান রাইটস বলছে, সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৮৯ জনে। এখনো নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষ।

জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, তুরস্ক ও সিরিয়ায় অন্তত আট লাখ ৭০ হাজার লোকের জরুরি ত্রাণ প্রয়োজন। কেবলমাত্র সিরিয়ায় ৫৩ লাখ লোক গৃহহীন হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে, শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে দুই কোটি ৬০ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

হিমশীতল আবওহায়া উপেক্ষা করে হাজার হাজার উদ্ধারকর্মী এখনো তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে গৃহহারা লাখ লাখ মানুষ অবর্ণনীয় অবস্থায় রয়েছে। তাদের জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও সিরিয়া। ওই ভূমিকম্পের ১৫ মিনিট পর ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি বড় ভূমিকম্প এবং পরে অনেকগুলো আফটারশক হয়। এতে তুরস্কের ১০টি শহরসহ সিরিয়ার একটি অঞ্চল।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামানমারাশ প্রদেশের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল।

বিধ্বংসী সেই ভূমিকম্পের পরপরই ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করেন তুরস্ক ও সিরিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের উদ্ধারকর্মীরা। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন বিভিন্ন দেশের উদ্ধারকারী সদস্যরাও। বাংলাদেশ থেকেও একটি উদ্ধারকারী দল সেখানে যোগ দিয়েছে।

সংবাদ সূত্রঃ আল-জাজিরা

Scroll to Top