rahul gandhi

লোকসভায় বিরোধী দলনেতার পদে কি রাহুল গান্ধী?

বিজেপি বিরোধীদের নিয়ে ইনডিয়া জোট গঠন করেও ভারতে সরকার গঠন করতে পারছে না কংগ্রেস। তবে দেশটির প্রধান বিরোধীর আসনে কংগ্রেসই। কেননা বিরোধীদল হিসেবে পার্লামেন্টে জায়গা পেতে হলে লোকসভার মোট আসনের ১০ শতাংশ জিততে হবে। আর এ কারণে স্বাভাবিকভাবেই লোকসভার প্রধান বিরোধী দলনেতা কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছিল। তখন ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে দলটির সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান রাহুল গান্ধী। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর বড় কৃতিত্ব রাহুলের বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাই কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীকে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে চান দলটির অনেক নেতা।

তা ছাড়া কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইনডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিক উদ্ধব ঠাকরের দল শিবসেনাও বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে রাহুলকেই চাইছে। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে কংগ্রেসের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মানিকম ঠাকুর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে রাহুলকে বিরোধী দলীয় নেতা করার বিষয়ে ব্যক্তিগত মত দিয়েছেন। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

তামিলনাড়ুর বিরুধুনগর থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসের এই সংসদ সদস্য লিখেছেন, আমি আমার নেতা রাহুল গান্ধীর নামে ভোট চাইছি। আমি মনে করি, লোকসভায় তারই কংগ্রেসের নেতা হওয়া উচিত। আমার আশা, কংগ্রেসের নির্বাচিত লোকসভার সদস্যরাও এমনটি চাইবেন।

কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য বিবেক টাংখাও একই ধরনের মনোভাব ব্যক্ত করে বলেন, রাহুল প্রচারণায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ছিলেন আমাদের নির্বাচনী প্রচারের মুখ। লোকসভার সংসদীয় পার্টির নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য তিনিই দায়বদ্ধ। তবে হ্যাঁ, রাহুল গান্ধী নিজের বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত একা নিতে পারেন না। সুতরাং সিদ্ধান্ত নিতে হবে দলীয় নেতা ও সংসদ সদস্যদের। আমার আশা, একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হবে।

কংগ্রেসের আরেক নেতা কার্তি চিদাম্বরম বলেন, আমি মনে করি বিরোধী দলীয় নেতার পদটি কংগ্রেসই পাবে। এই বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত মত, কংগ্রেসের তরফে রাহুল গান্ধী নিজেই অবশ্যই বিরোধী দলীয় নেতার পদটি গ্রহণ করবেন।

শুধু কংগ্রেসের নেতারাই নন, বরং ইনডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিক শিবসেনার সংসদ সদস্য সঞ্জয় রাউতও রাহুলকে লোকসভায় বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে চান। তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাহুল গান্ধী নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য প্রস্তুত থাকলে আমরা আপত্তি করব কেন? তিনি নিজেকে একজন জাতীয় নেতা হিসেবে একাধিকবার প্রমাণ করেছেন। তিনি অন্যতম জনপ্রিয় নেতা। আমরা সবাই তাকে চাই। তাকে পার্লামেন্টে বিরোধী দলীয় নেতা করা নিয়ে জোটে কোনো আপত্তি ও মতানৈক্য নেই।

এর আগে ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনে লোকসভায় কোনো বিরোধীদলের নেতা ছিলেন না। ওই সময়ে কংগ্রেস বৃহত্তম বিরোধীদল হলেও বিরোধীদলনেতা হওয়ার মতো আসন পায়নি তারা। ফলে প্রথম মেয়াদে মল্লিকার্জুন এবং দ্বিতীয় মেয়াদে অধীর চৌধুরী বিরোধীদলনেতা ছিলেন।

এবারের নির্বাচনে অধীর হেরে গেছেন। কেবল তিনি নয়, মধ্যপ্রদেশে দিগ্বিজয় সিংহ, ছত্তিশগড়ের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল, রাজস্থানের সি পি জোশি এবং হিমাচলে আনন্দ শর্মার মতো প্রবীণ নেতারাও হেরে গেছেন। ফলে রাহুল গান্ধী রাজি না হলে কংগ্রেসের জোট ইন্ডিয়ার নেতা কে হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Scroll to Top