ট্রাম্পের ভাষণ ‘কুকুরের ঘেউ ঘেউ’

জাতিসংঘে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণকে কুকুরের চিৎকারের সঙ্গে তুলনা করেছেন উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ং হো। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি মনে করেন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে উত্তর কোরিয়াকে ভড়কে দেবেন তবে তিনি দিবাস্বপ্ন দেখছেন। ট্রাম্পের উত্তর কোরিয়াকে ধ্বংস করে ফেলার হুমকির কড়া সমালোচনা করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলও। এদিকে, পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনার সুযোগ শেষ উল্লেখ করে তাদের ওপর কঠোর চাপ প্রয়োগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে।

মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র বা এর মিত্র রাষ্ট্রগুলোর ওপর কোনো ধরনের হামলা চালালে উত্তর কোরিয়াকে পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলা হবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

ট্রাম্পের ওই ভাষণের একদিন পর বুধবার প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায় উত্তর কোরিয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই ভাষণকে কুকুরের ঘেউ ঘেউ এর সঙ্গে তুলনা করে উত্তর কোরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ং হো বলেন, আমেরিকা যদি মনে করে হুমকি দিয়ে উত্তর কোরিয়াকে দমানো যাবে, তবে তারা দিবাস্বপ্ন দেখছে। বুধবার জাতিসংঘ সদর দফতরের বাইরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

রিং ইয়ং বলেন, আমাদের দেশে একটি প্রবাদ আছে যে, কুকুর ঘেউ ঘেউ করলেও কুচকাওয়াজ চলতেই থাকে। তিনি যদি মনে করে থাকেন কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে আমাদেরকে চমকে দিতে পারবেন তাহলে বলব তিনি দিবাস্বপ্ন দেখছেন। আমার সত্যিই তার সহযোগীদের জন্য দুঃখ হচ্ছে।

উত্তর কোরিয়াকে ধ্বংস করে ফেলার ঐ হুমকির কড়া সমালোচনা করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলও। এ ধরনের বক্তব্য কোনোভাবেই কূটনৈতিক ভাষা হতে পারে না উল্লেখ করে, সংকট নিরসনে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বা অবরোধ আরোপের পাশাপাশি আলোচনার ওপর জোর দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মার্কেল আরও বলেন, জার্মানি সবসময়ই এ ধরনের হুমকির বিরুদ্ধে। সামরিক পদক্ষেপের পরিবর্তে কূটনৈতিকভাবেই সংকট সমাধানের চেষ্টা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন জার্মান চ্যান্সেলর। এছাড়াও, আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে কোরীয় উপদ্বীপ নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে চীন। ট্রাম্পের ভাষণের একদিন পর বেইজিং-এ এ আহ্বান জানায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এর মধ্যেই জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে বলেছেন, পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনার সময় শেষ হয়ে গেছে। এখন সময় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার। বুধবার নিউইয়র্ক শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের এক সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

চীন এবং রাশিয়া এরইমধ্যে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নেয়া প্রস্তাবকে সমর্থন দিয়ে বলেছে, আমরা এক্ষেত্রে তাদের আরও কার্যকর সহায়তা কামনা করি। যেভাবেই হোক পরমাণু কর্মসূচী বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার নীতি পরিবর্তনে এ প্রস্তাবের বাস্তবায়ন করতে হবে। এটা আলোচনার সময় নয়, এখন তাদের ওপর চাপ প্রয়োগের সময়।

এদিকে, উত্তর কোরিয়ার যেকোনো ধরনের হামলা মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়ার পর এবার জাপানের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার জাপানের গোতেম্বায় অনুষ্ঠিত ওই সামরিক মহড়ায় দুই দেশের সেনা সদস্যরা স্থল যুদ্ধের নানা কৌশল অনুশীলন করেন।

বাংলাদেশ সময় : ১৮৫১ ঘণ্টা, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এ