ইউএস-বাংলা ট্র্যাজেডির এক বছর

নেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার এক বছর আজ। ঢাকা থেকে ৬৭ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু নিয়ে ২০১৮ সালের ১২ মার্চ দুপুরে কাঠমান্ডু ত্রিভুবন বিমানবন্দরে নামার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে বিমানটি। আরোহীদের ৫১ জনের মৃত্যু হয়, যাদের ২৭ জনই ছিলেন বাংলাদেশি আর ২২ জন নেপালি। নিহতের মধ্যে বিমানের পাইলট আবিদ সুলতান এবং কো-পাইলট পৃথুলা রশীদও ছিলেন।

কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার এক বিমান দুর্ঘটনার জন্য পাইলটের ভুল সিদ্ধান্ত এবং আচরণকে দায়ী করে নেপালের তদন্ত কমিটি। নেপালের তদন্তে বলা হয়, পাইলট ককপিটে বসে ধূমপান করছিলেন। দুর্ঘটনার আগে ‘মানসিকভাবে বিপর্যস্ত’ অবস্থায় ছিলেন ফ্লাইটে থাকা পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান। ঘটনার সময় পরিস্থিতি অনুযায়ী  তিনি \’সাড়া\’ দিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।

নেপাল সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির এ রিপোর্ট শুরু থেকেই প্রত্যাখ্যান করেছেন বাংলাদেশি তদন্তকারী ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন এম রহমতুল্লাহ। তিনি বলেন, এ রিপোর্টে নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ারের ভুল এবং ব্যর্থতাকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার আগে বিমানের ক্যাপ্টেন ও বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) মধ্যেকার কথোপকথন হয়। এতে এটিসির গাফিলতি ছিল। পাইলটদের সঙ্গে এটিসি টাওয়ারের ল্যান্ডিংয়ের আগের কথোপকথনে ছিল রানওয়ের কোন দিক থেকে পাইলট ল্যান্ড করবেন। পাইলটদের ভুল বার্তা দেওয়া হয়। এসব তথ্য তাদের তদন্ত রিপোর্টে বিবেচনায় আনা হয়নি। 

এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেসটিগেশন গ্রুপ অব বাংলাদেশ (এএআইজি-বিডি) প্রধান ক্যাপ্টেন সালাহ্‌উদ্দিন এম রহমতউল্লাহ বলেন, নেপালের তদন্ত প্রতিবেদনে যা উঠে এসেছে তা ঠিক আছে। তবে পাইলটকে একপেশেভাবে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু এটিসির যে ত্রুটি ছিল এগুলো উঠে আসেনি। পাইলট ল্যান্ড করতে অ্যাপ্রোচ মিস করেছিলেন। কিন্তু এটিসি পাইলটকে সহায়তা করতে পারত, কিন্তু তারা তা করতে পারেনি। বরং বিমানটি যখন এটিসি টাওয়ারের কাছ দিয়ে গিয়ে বিধ্বস্ত হয় তখন এটিসি টাওয়ারের কর্মকর্তারা টেবিলের নিচে আশ্রয় নেন।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার এক বছর উপলক্ষে বারিধারায় ইউএস-বাংলার কার্যালয়ে বাদ জোহর মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। নিহত ও আহতদের জন্য দোয়া করা হবে। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে বাংলাদেশের নিহত ২৫ জন ও নেপালের ৬ জনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। কাগজপত্র পেলে বাকিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে।

Scroll to Top