বরিশাল বিভাগে ৭২ জনের প্রাণঘাতী করোনা শনাক্ত

স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, বৃহত্তর ভোলা জেলা ব্যতীত এ পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে মোট ৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে । আর এই ৭২ জনের মধ্যে দুইজন ভারতীয় নাগরিকসহ বেশ কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছে। তবে আক্রান্তদের এখন পর্যন্ত সুস্থ হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে বিদেশি নাগরিকসহ ভিন্ন জেলা (সংক্রমিত) থেকে আগত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে রাখার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ফলে গত ১০ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বরিশাল সিটি করপোরেশনসহ বিভাগের ৬ জেলায় মোট ৭ হাজার ৭৩০ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। এরমধ্য হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো ৭ হাজার ২৪২ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৭৪ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে বিভাগের বিভিন্ন জেলায় হাসপাতালে (প্রতিষ্ঠানিক) কোয়ারেন্টিনে ৪৮৮ জন রয়েছেন এবং এ পর্যন্ত ১৯৩ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের ৬ জেলায় ১৬৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে প্রেরণ করা হয়েছে এবং গত ২৪ ঘণ্টায় বিভগের ৬ জেলায় ২১৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভাগের মধ্যে শুধুমাত্র বরিশাল জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৭ জনকে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে, তবে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি কাউকে।

এর বাইরে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভাগের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ১০৯ জন রোগী আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং এরইমধ্যে ৫৫ জনকে ছাড়পত্রও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানিয়েছেন, বরিশাল বিভাগে মোট আক্রান্তদের মধ্যে বরিশালে ৩২, পটুয়াখালীতে ১২, পিরোজপুরে ৫, বরগুনায় ১৭ ও ঝালকাঠিতে ৬ জনের কোভিড-১৯ পজেটিভ পাওয়া গেছে, তবে ভোলা জেলায় কারো আক্রান্ত হওয়ার খবর এখনো পাওয়া যায়নি। এছাড়া বরিশালের মুলাদীতে, পটুয়াখালী জেলার দুমকি ও বরগুনা জেলার আমতলী ও বেতাগীতে ১ জন করে ৪ জন ব্যক্তির করোনায় মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে পটুয়াখালীতে আক্রান্ত হওয়াদের মধ্যে ২ জন ভারতীয় নাগরিক রয়েছে।

জানা গেছে, গত ১৮ এপ্রিল এই উপজেলা থেকে ১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে চারজনের করোনা শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে তাবলিগ জামাতে আসা দুইজন ভারতের বিহারের নাগরিক এবং একজন পাবনা জেলার। এছাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়োজিত এক উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসারেরও করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, পুরো পটুয়াখালী জেলা লকডাউনে আছে। এরমধ্যে তাবলিগ জামায়াতে থাকা ২ ভারতীয় নাগরিকসহ যাদের করোনা শনাক্ত হয়েছে, স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী তাদের বিশেষভাবে নজরদারির মধ্যে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য বিভাগের মধ্যে বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর জেলা পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এর বাইরে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলা এবং ভোলার সদর, তজুমদ্দিন ও লালমোহন কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করেছে প্রশাসন।