বরিশালে জালিয়াতি মামলায় সাক্ষী দেওয়ায় বসতঘরে আগুন!

একটি জালিয়াতি মামলায় সাক্ষী দেওয়ায় বরিশালের বাবুগঞ্জের সীমান্তবর্তী ছয়মাইল নামক স্থানে সাক্ষীর বসতঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার সময় কাশিপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডস্থ ছয়মাইল কলসগ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাশিপুর ইউনিয়নের কলসগ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম একজন জালিয়াত প্রকৃতির লোক। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিভিন্নভাবে হামলা-মামলা দিয়ে সে হয়রানি করেন। এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে মামলা দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যের জমি দখল করাই তার পেশা। সর্বশেষ ২০১৪ সালে আবুল কালামের জমির কাগজপত্র জালিয়াতি করে দখল করার উদ্দেশ্যে স্থানীয় প্রায় ৪০ জনের নামে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে।

পরবর্তীতে থানা পুলিশের তদন্তে সে মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ওই বছরই কাগজপত্র জালিয়াতির অভিযোগে কলসগ্রামের বাসিন্দা রহিমা বেগম জালিয়াত চক্রের হোতা আবুল কালামকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ বছর থানা পুলিশের তদন্ত ও সাক্ষীদের বক্তব্য শেষে আসামি আবুল কালাম আদালতে দোষী প্রমাণিত হন। পরবর্তীতে এ মামলায় গত ১৪ ডিসেম্বর আদালত কাগজপত্র জালিয়াতির অভিযোগে আবুল কালামকে ৩ বছরের সাজা প্রদান করেন। এই রায়ের প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করে।

এ মামলার ২ নম্বর সাক্ষী ছিলেন কলসগ্রামের বাসিন্দা অটোচালক মো. শাহাবুদ্দিন হাওলাদার। ভুক্তভোগী অসহায় শাহাবুদ্দিন হাওলাদার জানান, আমি আবুল কালামের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার সাক্ষী ছিলাম। আর এ মামলায় আবুল কালাম জেলে যাওয়ায় তারই প্রতিশোধ নিতে আবুল কালামের চাচাতো ভাই শহিদুল ইসলাম, আবুল কালামের ছেলে জীবন, আবুল কালামের স্ত্রী হাজেরাসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন রাতের অন্ধকারে আমার বসতঘরে আগুন দিয়ে আমাকে সপরিবারে হত্যার চেষ্টা করেছে।

এ অগুনের ঘটনায় হাঁস-মুরগি, গরু, স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্র, জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত শাহাব উদ্দিন জানান অগ্নিকাণ্ডে ৫/৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, আমার এখন থাকার মতো স্থান নেই। আমি প্রশাসন ও আদালতে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার চাই।

কাশিপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হয়তো পূর্বশত্রুতার জেরেই এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। কেননা কিছুদিন আগে একটি মামলায় শাহাবুদ্দিন হাওলাদার সাক্ষী ছিলেন। আর সেই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার মাত্র ৪ দিনের মাথায় ন্যাক্কারজনক এ ঘটনা ঘটল। তিনি এ ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।